• ২৫ বৈশাখ ১৪৩২, শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫ ই-পোর্টাল

Janatar Katha

Banner Add
  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও
  • এছাড়াও
    • উৎসব
    • ব্যবসা
    • স্বাস্থ্য
    • শিক্ষা
    • প্রযুক্তি
    • হেঁসেল

Durga Puja,

রাজ্য

দুর্গা পুজোর অনুদান প্রত্যাখ্যানের ঢেউ আছড়ে পড়ল পূর্ব বর্ধমানে, এবার কালনার সংহতি ক্লাবের!

দুর্গা পুজোর সরকারি অনুদান ফেরানোর তালিকা বেড়ে হলো ৮ । তালিকায় যুক্ত হল পূর্ব-বর্ধমান জেলার নাম। রাজ্য সরকারের দেওয়া দুর্গা পুজোর অনুদান নিতে অস্বীকার করল পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা সংলগ্ন পূর্ব সাতগেছিয়ার সংহতি ক্লাব। যদিও সংগঠকদের তরফে দুর্গা পুজোর সরকারি অনুদান নিতে অস্বীকার করার কোনও যথাযথ কারণ ক্লাবের তরফে জানানো হয়নি। স্থানীয় থানাকে দেওয়া চিঠিতে উল্লিখিত আছে, অনিবার্য কারণের জন্য চলতি বছরে অনুদান তারা নেবে না।ইতিমধ্যে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ৭টি দুর্গা পুজো কমিটি সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করে স্থানীয় সরকারি দপ্তরে জানিয়ে দিয়েছে। সেক্ষেত্রে ওই ক্লাবগুলি ঘোষণা করে দিয়েছিলো যে তাঁরা আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়েই তার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার সেই তালিকায় এবার যুক্ত হল পূর্ব সাতগেছিয়ার সংহতি ক্লাব।সংহতি ক্লাবের লেটারহেডে কালনা থানার আই সি-কে চিঠি পাঠিয়ে ক্লাবের সম্পাদক সঞ্জীব গুপ্ত তাঁদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন। সেই চিঠিতে সঞ্জীব গুপ্ত লিখেছেন, অনিবার্য কারণ বশত এইবছর সংহতি ক্লাব সরকারি অনুদান গ্রহণ করতে পারবে না। তাঁরা প্রস্তাব দিয়েছে যে, তাঁদের জন্য ধার্য করা অনুদানের টাকা গরিব কল্যাণ উন্নয়নমূলক কাজে ব্যায় করলে তাঁরা কৃতজ্ঞ থাকবেন।পূর্ব সাতগেছিয়ার সংহতি ক্লাব-এর পক্ষ থেকে প্রশাসন কে জানানো হয়েছে যে, দূর্গা পুজোয় পুলিশের যাবতীয় বিধি, নিয়ম এবং নির্দেশিকা মেনেই তাঁরা পুজো আয়োজন করবে। এবং সরকারের যাবতীয় অনুমতি নিয়েই আগের বছরগুলির ন্যায় তাঁরা পুজো আয়োজন করবে।এর আগে হুগলির চারটি ক্লাব উত্তরপাড়ার বৌঠান সঙ্ঘ, উত্তরপাড়া শক্তি সঙ্ঘ, আপনাদের দুর্গাপুজো এবং কোন্নগরের মাস্টারপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি সরকারি অনুদান গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল। তাঁরা প্রত্যেকেই আরজি কর-এ কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদে দুর্গাপুজোর সরকারি অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। একই সুরে পুজোর অনুদান বয়কট করেছে জয়নগর মজিলপুর পুরসভার ৭ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ড, মুর্শিদাবাদের কৃষ্ণপুর সন্ন্যাসীতলা মহিলা দুর্গোৎসব কমিটি এবং কলকাতার মুদিয়ালি আমরা কজন ক্লাব। প্রত্যাখ্যানের তালিকা বেড়ে আট হলেও পূর্ব সাতগেছিয়ার সংহতি ক্লাব তাঁদের দুর্গা পুজোর অনুদান ফেরানোর কারণ তাঁরা ব্যক্ত করেননি।পুজোর অনুদান প্রত্যাখ্যানকারী ক্লাব গুলির মূল বক্তব্য, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার বিচার চায় তারা। তাঁরা জানান ইতিমধ্যে এই মর্মে ক্লাবের তরফে জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, পুজোয় রাজ্য সরকারের আর্থিক অনুদানের পাশাপাশি অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থার খরচাও মকুব করা হয়েছে। অন্যদিকে বিদ্যুতের ক্ষেত্রে আগেরবছর ৬৬ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছিল। এই বছর থেকে ছাড়ের পরিমাণ বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৪
ভ্রমণ

দুর্গাপুজোয় দার্জিলিং বেড়াতে যেতে চাইছেন? স্পেশাল ট্রেন পূর্বরেলের

আগামী ৯ অক্টোবর (বুধবার) দুর্গা ষষ্ঠী আর বেশিরভাগ বাঙালি ঠিক ষষ্ঠীর দিনটাই বেছে নেন বেড়াতে যাওয়ার জন্য। কেউ যাবেন পুরী , কেউ কাশ্মীর, কেউবা যাবেন দার্জিলিং। কিন্তু সময় মত টিকিট কাটা হয়নি, বেশিরভাগ ট্রেনেই ওয়েটিং লিস্টের লাইন লম্বা। এদিকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছেও আপনার আছে। চিন্তা কিসের? মুশকিল আসান পূর্ব রেল তো আছে, আপনাদের সঙ্গে। অক্টোবর মাসের ৯ তারিখ , ১৬ তারিখ, ৩০ তারিখ (অর্থাৎ কালীপুজোর আগের দিন) এবং নভেম্বর মাসের ৬ তারিখ (অর্থাৎ ছট পুজোর আগের দিন) দার্জিলিং যাওয়ার জন্য আপনাদের জন্য হাওড়া থেকে ছাড়বে স্পেশাল ট্রেন (০৩০২৭ আপ)। ট্রেনটি হাওড়া থেকে রাত ১১ঃ৫৫ মিনিটে ছেড়ে ব্যান্ডেল জংশন, নবদ্বীপ ধাম, কাটোয়া, আজিমগঞ্জ, জঙ্গিপুর রোড, মালদা টাউন, বারসোই, কিষাণগঞ্জ ও আলুয়াবাড়ি রোড হয়ে পরের দিন সকাল ১০ঃ৪৫ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছাবে। যারা ইতিমধ্যেই ওই সময়ে দার্জিলিঙে যাওয়ার টিকিট পেয়েছেন কিন্তু আসার টিকিট কেটে উঠতে পারেননি তাদের জন্য আগামী অক্টোবর মাসের ১০, ১৭, ৩১ এবং নভেম্বর মাসের ৭ তারিখ নিউ জলপাইগুড়ি থেকে হাওড়া আসার জন্য একটি স্পেশাল ট্রেন চলবে (০৩০২৮ ডাউন)। ট্রেনটি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দুপুর ১২ঃ৪৫ মিনিটে যাত্রা শুরু করে আলুয়াবাড়ি রোড, কিষাণগঞ্জ, বারসোই, মালদা টাউন, জঙ্গিপুর রোড, আজিমগঞ্জ, কাটোয়া, নবদ্বীপধাম, ব্যান্ডেল হয়ে রাত ১২:১০ মিনিটে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছাবে। ট্রেনটিতে একটি এসি ফার্স্ট এবং এসি 2 টায়ার কম্বাইন্ড কোচ, একটি এসি 2 টায়ার, পাঁচটি AC 3 টায়ার, একটি এসি ৩ ইকোনমি, আটটি স্লিপার কোচ এবং ৩টি জেনারেল সেকেন্ড ক্লাস কোচ থাকবে।

আগস্ট ২৯, ২০২৪
বিনোদুনিয়া

কোদালিয়া নেতাজি সংঘের দুর্গাপুজোয় সুকুমার রায়ের ছোঁয়া

৩৫ তম বর্ষে পদার্পণ করল কোদালিয়া নেতাজি সংঘের দুর্গাপুজো। ৩৫ তম বর্ষে তাদের ভাবনা সুকুমার রায়ের স্মরণে অসম্ভবের ছন্দেতে। রথযাত্রার বিশেষ দিনে খুঁটিপুজো-র মাধ্যমে তাদের পুজোর শুভ সূচনা হল। গত বছর ভারতীয় ফুটবলকে তাদের দুর্গাপুজোর ভাবনায় তুলে ধরা হয়েছিল। এবার ভাবনাতে আমাদের সকলের প্রিয় সুকুমার রায়।এই ভাবনা প্রসঙ্গে ক্লাবের পক্ষ কার্যকরী সভাপতি অর্কদেব চ্যাটার্জি জনতার কথাকে জানিয়েছেন, সুকুমার রায়ের যে সৃষ্টি তার বেশ কিছু অংশকে আমরা তুলে ধরেছি। ছোট থেকে বড় অর্থাৎ নয় থেকে নব্বই সব ধরনের মানুষের কাছেই যাতে এই কাজটা পৌঁছে দেওয়া যায় সেটারই চেষ্টা করছি। আমাদের এই বছরের শিল্পী সঞ্চিত বণিক, আলোতে রয়েছেন শুভদীপ সর্দার। অর্কদেব আরো জানিয়েছেন আবোল তাবোল, হযবরল এই বিষয়কে মাথায় রেখেই আমরা প্রতিমাকেও সাজিয়ে তুলছি। প্রতিমা করছেন সন্দীপ বোস। আগস্টে আমাদের থিম সং এর ও উদ্বোধন করা হবে।ক্লাবের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে তাদের এই পুজোর উদ্বোধনে উপস্থিত থাকবেন সত্যজিৎ রায়ের ছেলে পরিচালক সন্দীপ রায়, বিশিষ্ট অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী, শিল্পী সনাতন দিন্দা থেকে শুরু করে আরো অনেকে।

জুলাই ১৭, ২০২৪
রাজ্য

পুজোর পর ঈদেও বাংলায় বোনাস বৈষম্য সিভিক ভলান্টিয়ারদের, অভিযোগে সরব শুভেন্দু

বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগে বরাবরই সরব থাকে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ উঠল মমতা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। ঈদের দিনে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বোনাস বৈষম্যের অভিযোগে সরব হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্গা পুজো ও ঈদের সময় সিভিক ভলান্টিয়ারদের বোনাসের অঙ্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা প্রাপ্তির ছবিও তুলে ধরেছেন তিনি।বিরোধী দলনেতা এক্স হ্যান্ডেলের শুরুতেই, এক কাজ এক বোনাস-এর দাবি জানিয়েছেন। তারপর সিভিক ভলান্টিয়ারদের বোনাসের অঙ্ক তুলে ধরেছেন।নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শুভেন্দু অধিকারী সরকারি বিজ্ঞপ্তি তুলে ধরে লিখেছেন, দুর্গাপুজো সময় কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারদের ৫,৩০০ টাকা করে বোনাস দেওয়া হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ারদের ২ হাজার টাকা করে বোনাস দেওয়া হয়। পাশাপাশি দুটি অ্যাকাউন্টে ওই বোনাস প্রাপ্তির ছবিও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। ঈদে কিছু জেলা পুলিশ ৫,৩০০ টাকা বোনাস দিয়েছে, কয়েকটি জেলা ৬,০০০টাকা বোনাস দিয়েছে।I demand ONE JOB ONE BONUS.Bonus Amount for Civic Volunteers:During Durga Puja:-@KolkataPolice - Rs. 5,300/-@WBPolice - Rs. 2,000/-During Eid-ul-Fitr:-Some Police Districts - Rs. 5,300/-Other Police Districts - Rs. 6,000/-Why this disparity? All the Civic Volunteers https://t.co/WtzG2OhanT pic.twitter.com/0A2hP3oitv Suvendu Adhikari (Modi Ka Parivar) (@SuvenduWB) April 11, 2024এরপরই বিরোধী দলনেতা লিখেছেন, কেন এই বৈষম্য? সমস্ত সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজের বিবরণ এবং দায়িত্ব একই, তাহলে তাদের দেওয়া বোনাসের পরিমাণ এক নয় কেন?এই বৈষম্যের বিষয়টির অবসানে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন শুভেন্দু। এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, আমি মাননীয় স্বরাষ্ট্র সচিবকে অনুরোধ করছি এই বৈষম্যের অবসান ঘটাতে এবং সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করা আমাদের সকল বোন ও ভাইদের উৎসবের সময় সমানভাবে অর্থ প্রদান করতে।

এপ্রিল ১১, ২০২৪
নিবন্ধ

মানুষ নেই! হু হু করে জনবিরল হয়ে পড়ছে গ্রাম...

ঢাকের আওয়াজে কান পাতা দায়; সঙ্গে দুটি কাঁসর ও পেটানো ঘণ্টার সোচ্চার সঙ্গত। ঠাকুরঘরের বারান্দায় কজন মেয়ে-বৌয়ের জটলা, তাদের ফাঁক দিয়ে মাঝে মাঝে উঁকি মারছে মা দুর্গার চকচকে মুখখানা আর শিবঠাকুরের ঢুলুঢুলু শ্রীনয়ন। ধুনুচির ধোঁয়া ঘণ্টার অবিরাম টুংটুং নীচে একপাল কুচোকাঁচার হাঁ করে কুশলী ঢাকীদের দিকে তাকিয়ে থাকাসন্ধ্যারতি করছে সামান্য দুলে দুলে আমাদের পুরোহিত বুড়োদা, মানে ব্রজদুলাল মুখোপাধ্যায়। অহেতুক দেখনদারি নেই; নেই প্রয়োজনাতিরিক্ত অঙ্গসঞ্চালন। প্রায় তিন দশক বুড়োদা এমনি করেই পুজোর চারদিন সকাল-সন্ধ্যা নিষ্ঠাভরে মায়ের আরতি করে আসছে। বুড়োদার বাবা, স্বর্গত ব্রজরাখাল মুখোপাধ্যায় (যাঁকে আমরা দাদামশাই বলতাম) পূজারী ছিলেন এর আগে। কৃশ দীর্ঘকায় বৃদ্ধ মানুষটির ঈষৎ ঝুঁকে পড়ে দেবার্চনার স্মৃতি মনে গাঁথা হয়ে আছে আমার! সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে আজও, কোথাও তার ব্যতিক্রম হয় নি গত পঞ্চাশ বছরে রীতি-ভক্তি-আচার-অর্চনায়!ভুল বললাম! মস্ত তফাৎ হয়ে গেছে পুজোতলার ভীড়ে। যে মণ্ডপে আরতির সময় দাঁড়ানোর ঠাঁই মেলা দুষ্কর হতো একদিন, আজ তা বেশীর ভাগ সময় শুনশান। প্রসাদ বিতরণের সময় নরক গুলজার হতো এখানে, ইদানীং ডেকে ডেকে প্রসাদ বিলিয়েও শেষ হতে চায় না ফলপ্রসাদের বিশাল পিতলের রেকাব।মানুষ নেই। হু হু করে জনবিরল হয়ে পড়ছে গ্রাম। নাগরিক জীবনের দুর্নিবার আকর্ষণে গাঁ-গঞ্জ থেকে একমুখী জনস্রোত ধেয়ে চলেছে শহরপানে। আগে পুজোর সময় শহরবাসী মানুষ মাটির টানে ফিরে আসতেন দেশ-গাঁয়ে এই কয়টা দিন ; ইদানীং সেই প্রবণতাও নিভু নিভু । রাঢ়বঙ্গের গ্রামে গ্রামে আজ শুধু কিছু বয়স্ক মানুষ বাপপিতেমো-র ভিটে আগলে বসে আছেন ; পরের প্রজন্মে বোধ হয় একেবারেই তালা ঝুলে যাবে এই সব শূণ্য জনপদে !কৈশোর-তারুণ্যের দিনগুলিতে দূরের বাসা থেকে শত অসুবিধা-যোগাযোগের অপ্রতুলতা তুচ্ছ করে যখন গ্রামে ফিরতাম পুজোর সময়, প্রতিবার দেখতাম গাঁয়ের বন্ধুরা বড় হয়ে গেছে আরেকটু ঘোমটা টেনে ঘুরছে ফিরছে কিছু নতুন বউ ঝুমঝুমিয়ে খেলে বেড়াচ্ছে কটা ব্র্যান্ড নিউ গুড়গুড়ে (এরা কে যে কার বাচ্চা, সেটা সমঝে নিতেই সময় লেগে যেত অনেকটা) বিয়ে হয়ে গেছে দুচারটি মেয়ের (আর কোনো দিন দেখা হতো না তাদের সঙ্গে)... সকালবেলা দুয়ারের সামনে জলের ঘটি পাশে নিয়ে মাদুর-এ পা ছড়িয়ে রোদ পোয়াতে থাকা দুয়েকজন দাদু পরের বছর অদৃশ্য হতেন...দিন গেল... বছর গড়ালো আমাদের পুজোতলা চাতোর (চত্বর -এর অপভ্রংশ) -এর কাছের বাঁশবনে সাঁঝবেলায় ভয়ের হাতছানি কমতে লাগলো ধীরে ধীরে পাশের পুকুরপাড়ে তেঁতুলগাছগুলোর মগডালের দিকে রাতে ভয়ে তাকাতে না পারা কমে গেল বিদ্যুতের আলো-বোকাবাক্স-কেবললাইন - দুর্বল ওয়াইফাই-সবল মোটরসাইকেলের ঝাঁক গ্রাম-শহরের ফারাক কমিয়ে দিল দিনে দিনে। তবু খামারবাড়ির ছয়ফুটিয়া দাঁড়াশসাপ... কার্নিশে ঝুলন্ত মাটির হাঁড়ির বাসিন্দা কবুতরের দল... প্রাচীন অশ্বত্থগাছে দিনশেষে ঘরে ফেরা টিয়াপাখিরা সবাই দেখতে পেল, পাড়া নীরব হচ্ছে। মাটির বাড়িগুলি যত বদলে যেতে লাগলো রঙিন পাকাবাড়িতে, তত শূণ্য হয়ে গেল সেসব বাড়ির তকতকে আঙিনা। বহু ভিটেতে তুলসীতলায় সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলে না আর; সদর দরজার মরচেধরা তালায় কুমড়েপোকার মাটি জমানো বসত!অষ্টমীর সকালে রূপা এসে গেল মেয়েকে নিয়ে। সঙ্গে এসেছে তিস্তা-র সহপাঠী অরুণিমা। আজন্ম সল্টলেকবাসী বন্ধুটির জীবনে এই প্রথম একটা গোটা পুজো কলকাতার বাইরে গাঁয়ে কাটানো!অষ্টমী-নবমী দুদিন ধরে চাতোর-এর মর্মরবেদীতে বসে রইলাম পুজোর সময়। কিছু কথাবার্তা পাড়াতুতো দাদাদের সাথে মেয়েকে পাশে নিয়ে দাঁড়িয়ে আরতি দেখা ফুলের মালা-দীপের আলো-ধূপের ধোঁয়ার পিছন থেকে খুঁজে নেওয়া শরণাগতদীনার্তপরিত্রাণপরায়ণা জগজ্জননীকে স্তবের বাণীর আড়াল থেকে নীরবে ডেকে যাওয়া সর্বস্যার্তিহরা নারায়ণী মা-টিকে!নবমীর দুপুরে ওপাড়ার বারোয়ারিপুজোয় পশুবলির আয়োজন। আশৈশব কখনোই সেই সহিংস আচারে সামিল হতে পারি নি। বলির পর ওপাড়া থেকে উৎসাহীরা দলে দলে এসে সমবেত হয় হরগৌরীতলায়। দুই পুজোর দুই দুই চার ঢাকির উচ্চ-ডেসিবেল বৃন্দবাদন যার যার নিজের সেরা পুজোর পোশাকটির সগর্ব উপস্থাপনা ভীড়ে ভীড়াক্কার চাতোর-এ গরমে হাঁসফাঁস বিনবিনে ঘাম আনকোরা শাড়ির খসখস... বছরপরে দেখা হওয়া সখীদের উচ্ছ্বাস তরুণদলের সতৃষ্ণ দৃষ্টিপাত মহানবমীর মধ্যাহ্নই এ গ্রামে পুজোর শীর্ষবিন্দু!সেদিন আর নেই! ফাঁকায় ফাঁকায়, অনুচ্চকিত ছন্দে এবার যাপিত হলো মহানবমীর দুপুরের আরতি... যজ্ঞ... হোমের ফোঁটা... শান্তিজলসিঞ্চন তুমি নির্মল করো মঙ্গলকরে মলিন মর্ম মুছায়ে বেলা তিনটের মধ্যে পুজো শেষ । রূপা-তিস্তা-অরুণিমা-জ্যাঠতুতো দাদা ও দুই বৌদি মিলে দুখানা টোটো বোঝাই হয়ে বেরোনো হলো সাড়ে তিনটে নাগাদ বাসুদা গ্রামের উদ্দেশ্যে । পড়ন্ত বেলা ফলন্ত ধানক্ষেতের উপচে পড়া সবুজ পথের দুধারে হলুদ ফুলে ঝিকমিক লম্বা সোনাঝুরি গাছের গ্রীন টানেল ঘরমুখো পাখিদের কলতান চার কিমি দূরে বনপাশ-কামারপাড়া থেকে গাড়ি বাঁদিকে ঢুকে পড়লো খুরুল গ্রামের রাস্তায়। শুনশান পথ খানিক খোবলানো রাস্তা মাথার ওপর অসহ্য নীল আকাশ, সেথায় গাভীর মতো চড়ছে সাদা মেঘের পাল হরিয়ালা বন্যায় ভেসে যাচ্ছে চরাচর! এ পথে আসি নি আগে কখনো। হে ধরিত্রীমাতা, কী বিচিত্র শোভা তব, কী বিচিত্র সাজ!মহিমা তব উদ্ভাসিত মহাগগনমাঝে,বিশ্বজগৎ মণিভূষণবেষ্টিত চরণে আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজিত সেই সত্যসুন্দরের অপরূপ রূপ দেখতে দেখতেই খুরুল পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম বাসুদা। গ্রামের শুরুতে শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রমের সামনে যাত্রাবিরতি। খোলামেলায় অবস্থিত আশ্রমে ঢুকেই রামকৃষ্ণদেব-মা সারদা-স্বামীজীর স্মৃতিমন্দির; পাশেই অস্থায়ী মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন। পুকুর-বাগান-বিদ্যাপীঠ-ভক্তকর্মীআবাস ছড়ানো আশ্রমটি ভালোই পুরোনো; এ অঞ্চলে সমাজসেবা ও শিক্ষাবিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে আসছে বিগত বেশ কয়েক দশক ধরে।থাকার ইচ্ছে ছিল বেশ কিছুক্ষণ, কিন্তু সহসাই পুব আকাশে নিবিড়কৃষ্ণমেঘসঞ্চার ভড়কে দিল আমাদের। এই মাঠঘাটের রাস্তায় ঝেঁপে ঝড়বৃষ্টি এলে হাঁড়ির হাল হবে সবার। অগত্যা মহারাজের সঙ্গে দেখা না করেই দুড়দাড় করে টোটো-সমাসীন হলাম আবার।সময় সংক্ষেপ করতে অন্য পথ ধরা হলো এবার। বিকেল গড়িয়ে আসছে । পুব আকাশ কালো হচ্ছে বাতাসে ভিজে গন্ধ পাখপাখালী ঘরে ফিরছে দ্রুত ডানায়। এ পথের অনেকটা জঙ্গুলে; গ্রামের মধ্যে দিয়ে শর্টকাট করতে গিয়ে পেরোতে হলো প্রায় এক কিমি উঁচুনীচু মাটির রাস্তা, প্রতি মুহূর্তে টোটো উল্টে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে। কিমিদশেক পথ সবুজে ভেসে, মেঠো নালা-বুনোফুলে বানভাসি বনবিতান-নিবিড় বাঁশবন-শস্যময়ী প্রান্তর পেরিয়ে ঘরে ফিরে এলাম সাঁঝের মুখে।সন্ধ্যা ঘনালো। আরতির পর পুজোতলার আলোছায়ায় মা-বোনদের সিঁদুরখেলা। কয়েক বছর পর পরই এয়োস্ত্রীদের এই নবমীসন্ধ্যার শুভলোকাচার থেকে নীরবে সরে যান কেউ কেউ। শূণ্যসিঁথি.. কৃচ্ছ্রসাধন... মঙ্গলানুষ্ঠান থেকে নির্বাসন তাঁদের গোপন দীর্ঘশ্বাস বুঝি ভেসে বেড়ায় পুজোর পূণ্যময় পরিসরে!ড. সুজন সরকার, বর্ধমান।।

অক্টোবর ২৮, ২০২৩
বিনোদুনিয়া

প্রতারিত হয়েও, আগমনী গানের সুরের মুর্ছনায় ভেসে 'উমা আইলো' মধুরার-ই ঘরে

বছরভর অপেক্ষা সেই চারটে দিনের। যে যার সাধ্যমত আয়োজন করে দেবী দুর্গা-র আরাধনায় ব্রতী হয়। দেবীর মর্ত্যে আগমনের আশায় যে গান বাঁধা হয় তারই নাম আগমনী গান। আগমনী গানের প্রেক্ষাপট আমাদের বঙ্গজীবনের সামাজিক প্রেক্ষাপটের সাথে মিলেমিশে এককার হয়ে গেছে।পুরাণে শিব-দুর্গা বা হর-পার্বতী সম্বন্ধে যাই লিপিবদ্ধ থাকনা কেন আমাদের বঙ্গের লৌকিক দেবদেবীদের নিয়ে বেশ কিছু উপাখ্যান আছে। সেগুলির মধ্যে শিব-দুর্গার এই উপাখ্যান অন্যতম। শিব-দুর্গার এই উপাখ্যানকে সামনে রেখেই বাংলায় রচিত হল আগমনী গান। লোকমুখে প্রচলিত কাহিনীর দিকে যদি নজর দেওয়া যায়, তাহলে জানা যাবে, বিত্তশালী বাবা দক্ষ গিরিরাজের মেয়ে উমার (দূর্গা/পার্বতী) শ্মশান বাসি শিবের সাথে বিবাহ হয়েছে। বিয়ের পরে সাংসারিক রীতি অনুযায়ী দ্বিরাগমনে উমা শশুর বাড়ি চলে গেলে মেয়ের কথা ভেবে ভেবে মা মেনকার মন আকুল হয়ে ওঠে।এই শরৎ কালের কোনও এক রাতে মেয়ে উমাকে স্বপনে দেখে মা মেনকা কাতর অনুরোধ করে গিরিরাজকে বলেন উমাকে কয়েকদিনের জন্য বাপের বাড়ি নিয়ে আসতে। অবশেষে মা মেনকা ও বাবা দক্ষরাজের অনুরোধে উমা তাঁর শ্মশান বাসী ভোলানাথকে অনেক বুঝিয়ে কয়েকদিনের দিনের জন্য বাপের বাড়ি আসতে সম্মত হয়। উমার বাপের বাড়ি আগমনকে কেন্দ্র করেই যে গান রচিত হয় তাঁকেই আগমনী গান বলে অবিহিত করা হয়।সারা বছর নানা মাধ্যমে এত গান রিলিজ হয় পুজোর গান-র সেই অর্থে কৌলীন্য হয়ত অনেকটাই হারিয়েছে। কিন্তু তাঁর মধ্যেও পুজো উপলক্ষ্যে বেশ কিছু কাজ হচ্ছে। সেরকমই একটি গান আইলো উমা। বিশিষ্ট কণ্ঠ সঙ্গীত শিল্পী মধুরা ভট্টাচার্যের ইউটিউব চ্যনেলে প্রকাশিত হলো দুর্গা পুজো উপলক্ষে পুজোর আগমনী গান আইলো উমা। গানটির সুরকার প্রদ্যুত দে সরকার, মিউজিক অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছেন সৌরভ বাবাই চক্রবর্তী, কথাঃ প্রিয় চট্টোপাধ্যায়, গানটিতে তবলা সঙ্গত করেছেন সুভাষ, পল, সুভাষ (সেতার) বুবাই (বাঁশি), অ্যালবামটির ভিডিওগ্রাফি করেন অভিষেক আগরওয়াল। এছাড়া কস্টিউম ডিজাইন করেন সুমিত্রা মুখার্জি, যিনি সম্পর্কে মধুরার দিদি হন। মেকাপ অরিজিত মাইতি, গানটির মিক্সিং মাস্টারিং করেছেন সঞ্জয় ঘোষ।আইলো উমা ভিডিও অ্যালবামটি ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে যথেষ্ট সারা ফেলে দিয়েছে। রিলিজ হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ৬০ হাজারের কাছাকাছি মানুষ ইতিমধ্যে গানটি শুনে ফেলেছেন। গানটির সুর থেকে কথা সর্বপরি মধুরার সুমধুর কণ্ঠ দর্শকদের মনে দাগ কেটেছে। সঙ্গীতপ্রিয় মানুষজনের মতে এই গানটির আবেদন অত্যন্ত কোমল। গানটি শুনতে শুনতে কেমন যেন হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। কারুর কারুর মতে গানটি শুনে বাংলা স্বর্নযুগের গানের কথা মনে পরে নাস্টালজিক হয়ে পড়ছেন।গানটি শুনতে যতই মধুর হোক, প্রকাশিত হওয়া অবধি রাস্তা কিন্তু অতটা মসৃন ছিল না। শিল্পী জানান, গানটি মধুরার নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশ করার কোনও পূর্ব পরিকল্পনা প্রাথমিক ভাবে ছিল না। মধুরা আক্ষেপের সাথে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে জানান, তাঁর পূর্ব পরিচিত কোনও এক ব্যক্তির মাধ্যমে একটি নামী মিউজিক কোম্পানি থেকে অফার আসে তাঁর কাছে একটি আগমনী গানের মিউজিক ভিডিও বানানোর জন্য। তিনি আরও জানান এর আগে ঐ কোম্পানির জন্য তিনি একটি রবীন্দ্র সঙ্গীত রেকর্ড করেছেন। তাই কোম্পানির ব্র্যান্ড স্বমন্ধে অবিহিত থাকায় রাজি হয়ে যান।মধুরা লাইভ অনুষ্ঠানে সেই মধ্যস্ততাকারী ব্যক্তির নাম জানান। তিনি বলেন সমরেন্দ্র দত্ত নামে এক ব্যক্তি তাঁকে অনুরোধ করেন, মধুরার পছন্দের সঙ্গীত পরিচালক, গীতিকার ও মিউজিসিয়ান বেছে নিয়ে একটি পুজোর গান তৈরি করে সেই নামী মিউজিক কোম্পানিকে দিতে। মধুরা জানান তাঁকে কোম্পানীর তরফে সেপ্টেম্বরের ২০-র মধ্যে গানটি শেষ করে দেওয়ার কথা বলা হয়। সময় খুব কম থাকা স্বত্তেও মধুরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই গানটি রেডি করার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছিলেন।মধুরা আরও জানান তিনি নিজের খরচায় প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ করার পর ঐ কোম্পানির সাথে মধ্যস্ততাকারি সমরেন্দ্র দত্ত কাছে অগ্রীম চান, বাধ সাধে সেখানেই। তিনি নানা আছিলায় তাঁর ফোন এড়িয়ে যাচ্ছিলেন। শেষমেশ সমরেন্দ্র দত্ত মধুরাকে জানান এই গানটি এখন হচ্ছে না। মধুরা লাইভ অনুষ্ঠানে তাঁর সকল শুভানুধ্যায়ী ও মিউজিক জগতের মানুষদের কে অনুরোধ করেন সকলেই যেন ঐ ব্যক্তি থেকে দূরত্ব রেখে চলে। বিশেষ করে অর্থনৈতিক আদানপ্রদান থেকে যেন অবশ্যই বিরত থাকে।মধুরা জানান, ইতিমধ্যে অনেক টাকাই ইনভেস্ট হয়ে গিয়েছিলো, এবং তাঁর সহযোগী, শুভাকাঙ্খী ও পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে ভিডিওটি সম্পূর্ণ করেন। মধুরা আরও জানান, উমা মা যেন চাইছিলেন যাতে এই ভিডিওটি মধুরার নিজের চ্যনেল থেকেই প্রকাশ পায়। গানটি শেষমেশ মধুরার নিজের ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রকাশ করে শিল্প স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন।৭০ থেকে ৯০ এর দশক সারা বিশ্বের বাঙ্গালী পুজোর দুমাস আগে থেকে দুটি জিনিসের জন্য গভীর আগ্রহে বসে থাকতো, একটি পুজা বার্ষিকী পত্রিকা অপরটি পুজোর গান। সে লতা মঙ্গেসকর থেকে আশা ভোঁসলে, হেমন্ত, সন্ধ্যা, মহঃ রফি, সতিনাথ মুখোপাধ্যায়, আরতি কে নেই সেই দৌড়ে? পুজোর গান হল শারদোৎসবে বাঙালির মন রঙিন-করা, স্মৃতি উদ্বেল-করা রেকর্ড সঙ্গীত। সেসময় রেকর্ড কোম্পানিগুলিতে পুজোর গানের প্রস্তুতি চলত প্রায় সারা বছর ধরে।এই পূজোর গানের দৌড়ে সঙ্গীতের রথী মহারথীদেরও দেখা মিলত, কখনো পণ্ডিত রবিশঙ্কর তো কখনো পুজোর গানে সুর দিচ্ছেন উস্তাদ আলি আকবর খান মত তাবড় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী। সুরকার পণ্ডিত রবিশঙ্কর গান বাঁধলেন হৈমন্তী শুক্লার জন্য। সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের পূজোর গানে সুর দিচ্ছেন স্বয়ং কিশোরকুমার! আবার উল্টোটাও! কিশোরের গানের সুর দিচ্ছেন লতা। বঙ্গ-জীবনের অঙ্গ পুজোর-গানের কথা বলতে গিয়ে সেতার সম্রাট পন্ডিত রবিশঙ্কর একবার বলেছিলেন গানও পুজোই। আমার জীবনের সংস্কারেও পুজো মিশে আছে। সংস্কার বঙ্গ জীবনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে মজ্যাগত। চৈতন্যভাগবত-এ বলা আছে, মৃদঙ্গ মন্দিরা শঙ্খ আছে সব ঘরে। দুর্গোৎসব কালে বাদ্য বাজাবার তরে। কালের চাকায় গানও ঘোরে! প্রথমে রেকর্ড (এল পি), তারপর এলো ক্যাসেট, সিডি হয়ে এখন পুজোর গান ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। এখন মানুষ গান শুধু শোনেই না নয়ন ভরে দেখে।

অক্টোবর ১৫, ২০২৩
নিবন্ধ

'রূপং দেহি জয়ং দেহি..' এই মহালয়ার ভোরে আজও যেন আমাদের কী হয়ে যায়!

নীলঅঞ্জনঘনপুঞ্জছায়ায় সম্বৃত অম্বর আর নেহাতই বদখত আমার খাঁদা নাক-এর নিরন্তর জলপ্রপাত স্তিমিত হয়েছে দিন কয় হলো। আশ্বিন যাই যাই করছে; সাদা মেঘের অগুন্তি ভেলা ভাসানো সুনীল আকাশেও যেন হেমন্তের মনকেমনিয়া মেজাজ আজ! পথে বেরিয়ে ঘাড়ে-মাথায়-কাঁধে লেপটে থাকা দুপুরের রোদ ততটা নিষ্করুণ লাগছে না আর, একটু বেলাশেষের আমেজ আছে তাতে!পুজোর বাজার তেতে উঠেছে অবশ্য! পুরো স্লগ ওভার-এর ব্যাটিং করে নিচ্ছে পিতৃপক্ষের অন্তিম লগ্নে ফানটুস ছোকরা-ফিসফিসে কিশোরী-টগবগে তরুণ-তরতরে তরুণী-গুছোনো গিন্নী-গেরেম্ভারী গেরস্ত সব্বাই! বেশ একটা হৈহৈ রইরই ব্যাপার!!শালবল্লা-বাঁশ-প্লাইউডের কাঠামো-রা তো এখানে সেখানে মাথা তুলছে বেশ কসপ্তাহ হয়ে গেল। ধুলিধূসর ইঁট-কাঠ-পাথরের জঙ্গলে হঠাৎ হঠাৎই জেগে উঠছে থাই প্যাগোডা-ভুটিয়া গোমফা-রাজস্থানী ঝরোখা-ফরাসী অপেরা! ভাঙা রাস্তায় শেষ মুহূর্তে বিটুমেন-এর পুল্টিশ দুপাশারি আটপৌরে বাড়িঘরের মুখ ঢাকছে কাতারে কাতারে কাপড়ের হোর্ডিং দীপিকা-আলিয়া-কিয়ারা-সন্দীপ্তা-মৌনীরা রহস্যময়ী হাসির ঝিলিক দিচ্ছে বস্ত্রাবরণ - স্বর্ণাভরণ - প্রসাধন - প্রলোভনসম্ভার নিয়ে.আজ রাত পেরোলেই দেবীপক্ষ শুরু। অখিল বিমানে বেজে উঠবে তাঁর জয়গান আলোর বেণু মাতিয়ে তুলবে ভুবন অন্তরে যে আবেশ লুকিয়ে লুকিয়ে ছেয়ে গেছে এ কয়দিন মুখরিত বর্ষণগীতের মেঘমন্দ্রিত ছন্দ বিদায় নেওয়ার পর অরুণবীনায় যে সুর বেজে উঠেছে অমোঘ উচ্চারণে সেই আনন্দযজ্ঞে মধুর আমন্ত্রণ কাল ভোরে মায়ের সকল সন্তানের: যে যেথায় আছো সিলেট থেকে সিয়াটল কাঠমান্ডু থেকে কেপটাউন!এই কেজো প্রাত্যহিকতার একঘেয়েমি, স্বার্থক্লিন্ন দরকষাকষির কুশ্রীতা, বড় বেরঙীন পেশাগত যাপনের মধ্যেও প্রতিবারের মতোই আগমনী আলো এসে প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়েছে মনের গোপন ঘরে। শহরের উপকণ্ঠে-সড়কপ্রান্তে-শস্যময়ী শ্যামল প্রান্তরের আনাচে কানাচে উপচে পড়া দুধসাদা কাশবন লহমায় মনকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে টাইমমেশিনে চড়িয়ে, চার দশকের ওপারে..এমনই সর্বব্যাপী শুভ্র কাশের সমুদ্র ছেয়ে থাকতো তিস্তার চরে, সেই সব মহালয়ার ভোরে আকাশবানী-র মহিষাসুরমর্দিনী সম্প্রচার শেষ হওয়ার পরই যখন গোটা জলপাইগুড়ি শহরের মানুষজন পায়ে পায়ে চলে আসতেন করলা নদীর বাঁধ বেয়ে জুবিলীপার্ক-এর দিকে, নেমে আসতেন আদিগন্ত কাশসঙ্কুল সেই বালিভূমিতে। সুনীল আকাশ.. ভোরের মায়াময় আলো.. কুলুকুলু করলা বাজির আওয়াজ যৌবনের হিল্লোলমনে পড়ে যায় শ্লথপদ সেই নেপালী বৃদ্ধের কথা উষষী ঊষার আবছায়া পথে যেতে যেতে যিনি থেমে গিয়েছিলেন আমার বন্ধুর বাড়ির পাশে; নীরবে দাঁড়িয়েছিলেন কিছুক্ষণ আধখোলা জানালার ঠিক সামনেই। বন্ধুদের শোয়ার ঘরের রেডিও-তে তখন রূপং দেহি জয়ং দেহি..-র অন্তহীন সুরসঞ্চার। খানিক দূরে দাঁড়িয়ে দেখেছিলাম লোলচর্ম মানুষটিকে জানালার কপাটে ভক্তিভরে মাথা ঠেকিয়ে প্রণতি জানাতে!এত বছরের গার্হস্থ্য মালিন্য - দুনিয়াদারির চাপ - জীবনযাত্রার পৌনঃপুনিকতাও পারে নি মহালয়ার ভোরে নিহিত রোমাঞ্চ এ মন থেকে মুছে ফেলতে। সিংহস্থা শশীশেখরা মরকতপ্রেক্ষা সেই দনুজদলনী, গুণাশ্রয়ে গুণময়ী নারায়ণী মা-টি হয়ে বছরভর যিনি আগলে রাখেন আমাদের, সহসাই যেন তিনি বড় কাছে এসে যান এই শরতের ঝঞ্ঝাবাতের নিশার শেষে রোদেলা সকালে ক্ষান্তবর্ষণ শরতের আকাশবীনা গানের মালা বিলায় চরাচর জুড়ে ভোরের পাখি মায়াবী আলোছায়ায় গেয়ে ওঠে তাঁর জয়গানসত্যি, এই মহালয়ার ভোরে আজও যেন আমাদের কী হয়ে যায়!!ড. সুজন সরকার, বর্ধমান।

অক্টোবর ১৪, ২০২৩
রাজ্য

বাড়ল দুর্গা পুজোর আর্থিক সহযোগিতা, বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

১০ দিয়ে শুরু, ২৫, ৫০ থেকে ৬০ ছুঁয়ে এবছর ৭০ হাজার। ২০২২ এর দুর্গাপুজোর সরকারি অনুদান ছিল ৬০ হাজার টাকা। সেই পড়িমান বেড়ে ক্লাব পিছু ৭০ হাজার টাকা করল রাজ্য সরকার। আজ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দুর্গা পুজো নিয়ে একাধিক ছাড়ের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও জানান যে, সরকারি বিভিন্ন দফতরের বিজ্ঞাপনও পুজো কমিটিগুলিকে দেওয়া হবে। বিজ্ঞাপন বাবদও কিছু টাকা ক্লাবগুলি পাবে।২০২৩ র এই বছর দুর্গাপুজোর বিসর্জন করারও দিন ধার্য করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজো কমিটিগুলিকে ২৬ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিমা নিরঞ্জন শেষ করে ফেলতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী সেরা পুজোগুলিকে নিয়ে পূজা কার্নিভ্যাল রেড রোডে অনুষ্টিত হবে লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন, অর্থাৎ ২৭ অক্টোবর।মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষনার সাথে সাথেই যেনো পুজো কমিটিগুলিতে বেজে উঠলো বাজলো তোমার আলোর বেণু...। তিনি এই অনুদানের ঘোষনার সাথে সাথেই সকলকে অনুরোধ করেন, সকলেই যেন সব সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রেখে, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে শারদীয় উৎসব পালন করেন।আজ মঙ্গলবার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের পুলিশ, প্রশাসন ও বাংলার পুজো কমিটিগুলো নিয়ে বৈঠকে বসেন। সারা রাজ্যের সমস্ত সরকারি অফিসে এই বৈঠক সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। সেখানেও স্থানীয় জেলাশাসক সহ এলাকার সাংসদ, মহকুমাশাসক, বিধায়ক সহ বিশিষ্ট সরকারি আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন দফতরকে সতর্কতামূলক বিষয়ে নানা পরামর্শ প্রদান করে বলেন, স্কুল ছাত্রদের স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে যেন পুলিশের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়। প্রত্যেক পূজা মণ্ডপের প্রবেশ ও বাহিরের পথ যেন আলাদা হয়। প্রাথমিক অগ্নি নির্বাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও মণ্ডপে রাখতে হবে। এছাড়াও প্রতিমা নিরঞ্জনের জায়গায় জলাশয়ের পাশে যেন আলো ও ব্যারিকেডের ব্যবস্থা করা হয়। যে সমস্ত জায়গায় দর্শক সমাগম বেশি হয় সেখানে জরুরি পরিস্থিতিতে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক, নার্স, অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সরকারি জরুরি বিভাগগুলির হেল্পলাইন নম্বরগুলো যেন পুজোর সময় কার্যকারি থাকে। পুজো কমিটিগুলিকে তাঁদের ভিড় নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রতিনিয়ত মাইকে ঘোষণা করতে হবে। সরকার প্রদত্ত জনকল্যাণমূলক হোর্ডিং সকলের দৃষ্টির সামনে লাগাতে হবে। এছাড়াও সরকারের বিভিন্ন দফতর বিজ্ঞাপন হিসাবে যে হোর্ডিং দেবে সেগুলিও সঠিক জায়গায় লাগাতে হবে। বাংলার আড়ম্বরপুর্ণ দুর্গাপুজো যে বহু মানুষের এক বিরাট রোজগারের দিশা সেই কথাও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই পুজোকে কেন্দ্র করে বঙ্গে ৬০ হাজার কোটি টাকার বাজার তৈরি হয়। তিনি প্রত্যেক পুজো কমিটিগুলির উদ্দশ্যে বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন লোকশিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের তাঁরা যেন তাঁদের পুজোয় জায়গা করে দেন। তাঁদেরও যাতে পুজোর সময় কিছু বাড়তি রোজগার হয় সেটাও আমাদের দেখতে হবে।মুখ্যমন্ত্রী জানান, পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৪০ হাজার বারোয়ারিতে দুর্গা পুজো হয়। শহর কলকাতার তিন হাজার বাদ দিলে বাকি ৩৭০০০ পূজা হয় জেলায়। তিনি বিভিন্ন আবাসনের পুজোরও ভুয়াসী প্রশংসা করেন। তিনি পরিবহণ দপ্তর ও রাজ্য পুলিশকে পুজোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।২০১৮ তে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপুজোয় সরকারের তরফ পুজো কমিটিগুলির পাশে দাড়ানোর জন্য ১০হাজার টাকা অনুদান দেন। বছর গড়াতে গড়াতে সেই অনুদান ৭০ হাজারে পৌঁছে গেল। উল্লেখ্য ২০২২ এ পুজো কমিটি পিছু ৬০ হাজার অনুদান ছিল। গতবছর ২০২২ এ সারা রাজ্যে মোট ৪২ হাজার ২৮টি পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছিল রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। এ ছাড়াও এবছরে বিদ্যুতের বিলে ছাড়ের পরিমানও বাড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, গতবছর বিদ্যুতের বিলে ছাড় ছিল ২/৩ এবছরে তে বেড়ে হল ১/৪। তিনি এবিষয়ে সিইএসসি এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন পর্ষদকে নির্দেশ দিয়ে দেন এই বৈঠকে।তিনি জানান, ২০২২ থেকেই অগ্নিনির্বাপক সংস্থার অনুমতি বাবদ কোনও টাকা দিতে হয় না। এবছরেও কোনও টাকা দিয়ে হবে না সেই সংক্রান্ত বিষয়ে। তাছাড়া তিনি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার মহিলা পরিচালিত পুজোগুলির প্রতি বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট দফতর গুলিকে।

আগস্ট ২২, ২০২৩
রাজ্য

সুর কাটলো কার্নিভালের, ক্ষোভ উগরে দিয়ে মঞ্চ ত্যাগ পুরসভার চেয়ারম্যানের, জেলাশাসকের প্রশংসা

কার্নিভালের মঞ্চ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে নেমে গেলেন বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশ সরকার। তিনি বলেন, কার্নিভাল খুব ভাল হচ্ছে আমার কারো বিরুদ্ধে ক্ষোভ বা রাগ নেই। আমার একটাই দুঃখ৷ দুমাস ধরে পৌরকর্মীরা কার্নিভালের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এদিন কার্নিভালের মঞ্চ থেকে একবারের জন্যও পৌরকর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হলো না। তিনি বলেন, রাস্তা পরিস্কার করা থেকে দুর্গাপুজো ও কার্নিভালের জন্য সবকিছু প্রস্তুত করেছে দু-আড়াই হাজার পৌরকর্মী। পৌরকর্মী ও আধিকারিকদের ধন্যবাদ জানানো হল না এটাই আমার দুঃখ। আমি একজন সামান্য শিক্ষক, আমার বয়স হয়েছে তাই আমি কারো অন্যায়টা গিলতে পারিনা। এরপর তিনি আর মঞ্চে ওঠেননি।এখানে উল্লেখ্য রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি বর্ধমান শহরেও কার্নিভালের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধন করেন মুম্বাইয়ের চলচিত্র অভিনেতা চাঙ্কি পাণ্ডে।এবিষয়ে জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা জানান, তারা পৌরসভার কাছে কৃতজ্ঞ। কার্নিভাল খুব ভাল ও সাক্সেস হয়েছে। জেলাশাসক জানান, আজকের কার্নিভালে ৩০টি পূজা কমিটি অংশগ্রহণ করেছে। মানুষের উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখে তিনি এ খুশি সে কথাও তিনি জানান। পরবর্তি সময়ে আরও বড়ো ভাবে কার্নিভাল করার কথাও তিনি ঘোষণা করেন। তিনি আরও জানান, পরের বছর জেলার অন্যান্য সাব-ডিভিশন থেকেও দুর্জাপূজা কমিটি গুলিকে আহ্বান করবেন এই কার্নিভালে অংশগ্রহণ করার জন্য। জেলাশাসক জানান এই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ১ সেপ্টেম্বর থেকে। সেদিন ইউনেস্কোর আমাদের বাংলার দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ ঘোষণা করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞ্যাপন র্যালি করা হয়েছিলো বর্ধমান শহরে। শুক্রবারের অনুষ্ঠানটিকে সফল করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।

অক্টোবর ০৭, ২০২২
রাজ্য

দুর্গাপুজো কার্নিভাল-২০২২ বর্ধমানে উদ্বোধনে বলিউডি অভিনেতা চাঙ্কি পাণ্ডে, উপচে পড়া ভিড়

মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে দুর্গাপুজোর শেষে বিসর্জনের কার্নিভাল শুরু জেলায় জেলায়। চারদিনের জমজমাট পুজোর শেষে রাজ্য জুড়ে আবার উৎসবে মেতেছে আবাল-বৃদ্ধা-বনিতা। পুর্ব বর্ধমানের বর্ধমান শহরেও চলছে কার্নিভাল। এই কার্নিভালের উদ্ধোধন করেন বলিউডের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা চাঙ্কি পাণ্ডে। ফিতে কেটে তিনি কার্নিভালের শোভাযাত্রার সূচনা করেন। উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভারাপ্রাপ্ত মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, প্রধান উদ্যোক্তা বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শম্পা ধাড়া, জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা, পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন, জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি দেবু টুডু, অতিরিক্ত জেলাশাসক সুপ্রিয় অধিকারী, বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশ সরকার এছাড়াও জেলার অন্য বিধায়করা, প্রশাসনিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক, জেলা পরিষদের কর্মাধক্ষরাও ছিলেন। কার্নিভালে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।

অক্টোবর ০৭, ২০২২
রাজ্য

বর্ধমানের পূজা কার্নিভালের মঞ্চে বসতে চলেছে বলিউডি তাড়কাদের চাঁদের হাট

শুক্রবার বর্ধমান শহরে হতে চলে দুর্গাপূজা কার্নিভালের জন্য যানচলাচলে নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে নির্দেশিকা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারী করল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। পূর্ব বর্ধমান জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক রামশংকর মন্ডল জানিয়েছেন, কার্নিভাল শুরু হবে বিকাল ৫ টে নাগাদ নীলপুর মোড় সংলগ্ন সৎসঙ্গ ভবন এলাকা থেকে। এই র্যালী শেষ হবে লক্ষ্মীপুর মাঠের পাঞ্জাবী পাড়া মোড়ে। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্জন গেটের সামনে করা হয়েছে তিনটি ভাগে প্রায় বিশাল মঞ্চ বাঁধা হয়েছে যা প্রায় ২০০ ফুট লম্বা । যেখানে উপস্থিত থাকবেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্ত্রীরা-সহ বিধায়ক অন্যান্য জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনিক আধিকারিকরা। গড়ে তোলা হয়েছে কড়া পুলিশি নিরাপত্তা। বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসনের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ এবং বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়কের ব্যবস্থাপনায় বর্ধমান শহরের ৩১ টি পুজো কমিটিকে নিয়ে হচ্ছে দুর্গাপূজা এবারের কার্নিভাল।আরও জানা গেছে, জি টি রোড ধরে চলবে এই কার্নিভালের র্যালী। সুত্র মারফত জানা গেছে কার্নিভ্যালে হাজির থাকবেন মুম্বাইয়ের বিশিষ্ট অভিনেতা চাংকি পান্ডে-সহ আরও অনেক সেলিব্রেটিরাই। কার্জনগেট চত্বরে প্রত্যেকটি পুজো কমিটিকে ৩-৪ মিনিট করে নিজেদের পারফরম্যান্স তুলে ধরার জন্য সময় দেওয়া হবে। সামগ্রিক বিচারের নিরিখে তাদের মধ্য থেকে পুরস্কৃতও করা হবে। প্রসঙ্গত, দুর্গাপূজাকে ইউনেস্কো হেরিটেজ ঘোষণা করাতে, মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যে সমস্ত জেলাতেই কালকে এই কার্নিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে।জি টি রোড ধরে হতে চলা এই কার্নিভালের জন্য বর্ধমান শহরে যানচলাচলে নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারী করল পূর্ব-বর্ধমান জেলা পুলিশ। শুক্রবার আলিশা বাস স্ট্যান্ড থেকে কার্জনগেট এলাকা ও রেলওয়ে ওভারব্রিজ হয়ে গোলাপবাস মোড় পর্যন্ত জি টি রোড বরাবর এই নির্দিশিকা কার্যকরী থাকবে। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, সকাল ৮ টা থেকেই পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলা নিষেধাজ্ঞা থাকছে (যতক্ষন কার্নিভাল চলবে)। বাস চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকছে দুপুর ১২ টা থেকে। ইকো-রিক্সায় (টোটো) নিষেধাজ্ঞা থাকছে দুপুর ২ টো থেকে। চারচাকা গাড়ীতে নিষেধাজ্ঞা থাকছে বিকেল চারটে থেকে এবং দু-চাকা যানে নিষেধাজ্ঞা থাকছে বিকেল সাড়ে চারটে থেকে।

অক্টোবর ০৬, ২০২২
কলকাতা

দুর্গাপুজোর ছয় দিন রেকর্ড ভিড় কলকাতা মেট্রোতে, আয় কতো? আর যাত্রী সংখ্যা?

মেট্রো রেলের ভিড়েই প্রমান মিলেছে এবার কলকাতা কীভাবে মেতেছিল দুর্গাপুজোয়। করোনা আতঙ্ক দূর হতেই লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় করেছে পুজোর মন্ডপে মন্ডপে। থিক থিক ভিড় মেট্রো রেলে। মেট্রো রেলে যাত্রীর পরিসংখ্য়ান দেখলেই চোখ কপালে উঠবে। এই লাইফ লাইনকে ভরসা করেই কলকাতায় যাতায়াত করেছেন লক্ষ লক্ষ যাত্রী। কোটি কোটি টাকা আয় করেছে মেট্রো কতৃপক্ষ।তৃতীয়া-চতুর্থী থেকেই রেকর্ড ভিড় হয়েছে মেট্রোতে। কতৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পঞ্চমী থেকে বিজয়দশমী পর্যন্ত কলকাতা মেট্রো ৩৯ লক্ষ ২০ হাজার ৭৮৯ জন যাত্রী বহণ করেছে। এর মধ্যে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোতে চড়েছেন ৩৭ লক্ষ ৪১ হাজার ৩৬১ জন যাত্রী। পাশাপাশি এই ছয় দিন পূর্ব-পশ্চিম মেট্রোতে যাতায়াত করেছেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ৪২৮ জন যাত্রী। এই দিনগুলিতে টোকেন, স্মার্ট কার্ড এবং স্মার্ট কার্ড রিচার্জ করে ৬ কোটি ০৬ লাখ ৯৪ হাজার ৫৬ টাকা আয় করেছে কলকাতা মেট্রো রেল। উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো আয় করেছে ৫ কোটি ৭৯ লাখ ৯০ হাজার ৭১৬ টাকা এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো ২৭ লাখ ৩ হাজার ৩৪০ টাকা আয় করেছে।

অক্টোবর ০৬, ২০২২
রাজ্য

আউশগ্রামের গোয়ালআড়া গ্রামে পুজো কার্নিভাল ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা

পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের গোয়ালআড়া গ্রামে পুজো কার্নিভাল ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা দেখা গেল এলাকাবাসীর মধ্যে। বিজয়াদশমীর বিকেলে গোয়ালআড়া সার্বজনীন পুজো কমিটির পুজো কার্নিভাল বের হয়। তাতে অংশ নেন আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার ও আব্দুল লালন । এই পুজো কার্নিভালে ছিল বিভিন্ন বাজনার দল, মহিলা ঢাকিদের দল,জীবন্ত প্রতিমার মডেল। পাশাপাশি হিন্দু,মুসলিম,খীষ্টান,শিখ, আদিবাসী এই জীবন্ত মানুষের মডেল নিয়ে সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া হয়।গ্রামের মহিলারা শঙ্খ ধ্বনি দিয়ে গ্রাম ঘোরেন।পাশাপাশি ঢাকের তালে তালে নাচলেন বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার ও আব্দুল লালন। বৃষ্টির জন্য এদিন একটু অসুবিধা হয় পুজো উদ্যোক্তাদের।আশপাশের গ্রামের মানুষ এই কার্নিভাল দেখতে সামিল হন আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের ৭ টি অঞ্চলের হাজার খানেক মহিলা ও পুরুষ।

অক্টোবর ০৬, ২০২২
নিবন্ধ

দুর্ঘটনায় স্বামীর অকালমৃত্যুর পর হারিয়ে গেল নবমীসন্ধ্যার এই আনন্দবাসর ছেড়

ওং নমো বিষ্ণু নমো বিষ্ণু নমো বিষ্ণু/নমো, অপবিত্র পবিত্রবা/ সর্বাবস্থা গতহপিবা/ যৎস্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং সবাহ্যাঃ অভ্যন্তরশুচি/ ওং নমো বিষ্ণু নমো বিষ্ণু নমো বিষ্ণু।হাতের তালুতে গঙ্গাজল নিয়ে মুখে ছিটিয়ে রোজকার মতো অঞ্জলি শুরু হলো আজও। দেহমন শুচি করে নিয়ে দেবতার উদ্দেশ্যে আত্মনিবেদন... তাঁর করুণা-আনুকূল্য প্রার্থনা... সচন্দনপুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলির আনুষ্ঠানিকতা--- সব নিয়েই সমাধা হলো মহানবমীর সকালের পুষ্পাঞ্জলি। হালকা রোদ... ফুরফুরে হাওয়া... নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় শরৎ আজ মনহারানো খুশী নিয়ে এসে হাজির। আজ মূল পুজো দুপুরে। আমাদের গ্রামের অপেক্ষাকৃত বড় (আকারে ও জনসংখ্যায়) বর্ণহিন্দুপাড়াটি গ্রামের পশ্চিমাংশে। আমরা তাকে ওপাড়া বলে থাকি। সেখানে একটি বারোয়ারীপুজো হয়, গ্রামের অধিষ্ঠাত্রীদেবী মা তারা-র মন্দিরের কাছেই। মহানবমীর দুপুরে ছাগবলী হয় সেখানে। এপাড়া ওপাড়ার পুজোর চার ঢাকী একযোগে দ্রিমিদ্রিমি বোল তোলে সেখানে, সঙ্গে জুটে যায় পুজোর সেরা নতুন পোশাকটি চাপিয়ে গাঁয়ের ছেলে-মেয়ে-বৌ-ঝি-তরুণ-যুবকের দল। মহাপূজার সবচেয়ে জমজমাটি সময় এই গ্রামে নবমীর দুপুরটিই--- অনেক দুমফটাস -ফিসফিস-খিলখিল-রহস্যময়ীহাসির ঝিলিক এর ভাঁজে ভাঁজে!বলি শেষ হতেই বাজনা বাজাতে বাজাতে সবাই হৈ হৈ করে চলে আসে এপাড়ায়। চাতোর-এ ততক্ষণে শুরু হয়ে গেছে আরতি। ভিড়ে ভিড়াক্কার পুজোতলা.. ঢাকঢোলকাঁসরঘণ্টায় কান ঝালাপালা... অনেকক্ষণ ধরে আরতি। চলে যায় ওপাড়ার মানুষরা... শুরু হয় হোম... সুকৌশলে ছোট ছোট কাঠের টুকরো পাঁজা করে সাজিয়ে অগ্নিসংযোগ... একটানা সুরেলা মন্ত্রোচ্চারণসহ ফুল-বেলপাতা-ঘৃতাহুতি... হোম-এর ফোঁটা... শান্তিজল...সকালে অঞ্জলির পর গুছিয়ে নাস্তা হোলো মুড়ি-ঘুগনি-বোঁদে-চা দিয়ে। ঢালা বিছানায় একটু গড়াগড়ি। বর্ধমান থেকে গাড়ি হাঁকিয়ে এসে গেল অনীক-চিত্রা-সুকন্যা-বাদশাদা। খানিক গল্পগুজব করে ঠাকুর প্রণাম সেরে সবাই মিলে রওনা দিলাম পাশের গ্রাম রতনপুর-এর উদ্দেশে।নারায়ণপুর থেকে মাত্র দুকি.মি. দূরে রতনপুর। বেশ বর্ধিষ্ণু এই গ্রামে আছে এক সাধুবাবার আশ্রম। এঅঞ্চলে প্রখ্যাত এই সাধুবাবার উল্লেখ আছে ভারতের সাধক-এও । বছরে ছমাস তিনি থাকতেন রতনপুরে , বাকি ছমাস বোলপুরের শ্রীনিকেতনে ওনার আরেক আশ্রমে। লোকে বলতো দুশো-র বেশী বয়স ওনার। খুব ছোটবেলায় একবার এসেছিলাম এখানে । বিশাল বটগাছের ছায়ায় এক খুব বুড়োমানুষের মুখ মনে পড়ে আবছা ।মূল সড়ক থেকে গাঁয়ের পথে কি.মি.খানেক ঢুকে নিরালা এক প্রাচীরঘেরা আশ্রম। সুবিশাল এক বটবৃক্ষ পিতামহ ভীষ্মের মতো তার অসংখ্য ডাল ও ঝুরি মেলে ছায়ায় ঢেকে রেখেছে সম্পূর্ণ এলাকা। বটমূলে বাঁধানো বেদী, পাশেই ছোট্ট দোচালা ঘরে সাধুবাবার প্রতিকৃতি সাজানো; একমনে পুজো করছেন এক শ্বেতবস্ত্রধারী ভক্ত। গুটিকয় বাচ্চা সঙ্গ দিল আমাদের... ঘুরে ঘুরে ছবি তুললাম সেই মহাবটচ্ছায়ে... দাঁড়ালাম গিয়ে পিছনের নিরালা পুকুরের বাঁধানো ঘাটে... দেখে এলাম আরো পিছনে বাঁধানো চত্বরের প্রান্তে সাধুবাবার সুন্দর মূর্তি... কথা বললাম আশ্রমের দায়িত্বে থাকা সত্তরোর্ধ্ব মানুষটির সঙ্গে।আষাঢ়-এর গুরুপূর্ণিমায় অনুষ্ঠান হয় আশ্রমে, আর চৈত্রমাসে তিনদিনের হরিসংকীর্তনে পাত পড়ে হাজার হাজার মানুষের। কোনো ভক্ত বা স্থায়ী আশ্রমিকের বাস নেই এখানে; সাধুবাবাও দেহ রেখেছেন সেই ৮৫ সালে, তবু সেই হাস্যমুখ যোগীপুরুষের অদৃশ্য উপস্থিতি আজও যেন রয়ে গেছে এই ছায়াসুনিবিড়শান্তিরনীড়-এর প্রতিটি ডালে ডালে পাতায় পাতায়!ফিরে এলাম নারায়ণপুর। ওরা বিদায় নিল মধ্যাহ্নভোজ-এর সনির্বন্ধ অনুরোধে কান না দিয়ে। ততক্ষণে জ্যেঠতুতো দাদা-র সম্বন্ধী জয় এসে গেছে বর্ধমান থেকে দুই বন্ধু বন্ধন আর অভিজিতকে নিয়ে। সবাই একসঙ্গে বসে গল্পগুজব-গানবাজনা করতে করতেই ওপাড়া থেকে জগঝম্প সহযোগে পুজোর ভিড় এসে হাজির। হৈ হৈ করে শুরু হয়ে গেল আরতি, আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আকাশ ভেঙে নামলো বৃষ্টি।সেই বৃষ্টিতে ঠাকুরঘর-মণ্ডপের ছাউনি-ছাতার তলায় ঠাসাঠাসি করে আমরা সবাই--- পাকাচুল প্রৌঢ়.. নুয়ে পড়া বৃদ্ধা.. টেরিবাগানো নবযুবক.. সালঙ্কারা নবোঢ়া তরুণী.. ফিটফাট গাঁয়ের জামাই.. সিকনি-গড়ানো বাচ্চা। একসময় বাদলধারা হলো সারা; হোম-শান্তিজল-ফোঁটা শেষ করে ফিরে এসে বিছানায় বডি ফেললাম তিনটে নাগাদ।আমাদের ছোটবেলায় নবমীর বিকেলে পাড়ায় নারকেল-কাড়াকাড়ি খেলা হতো। অনেকটা রাগবী খেলার স্টাইলে, একটা ঝুনো নারকেল নিয়ে পনেরো-বিশজন যুবকের টানাটানি, কে সেটা কুক্ষিগত করতে পারে। ঢাকঢোলকাঁসরের আবহসঙ্গীতে দারুন জমতো সেই নির্দোষ বলপ্রয়োগের খেলা। বহুদিন হলো উঠে গেছে সেই রীতি।তবে এখনও আছে নবমীর সন্ধ্যায় আরতি-র পর চাতোর-এ সিঁদুরখেলা। শুরু হয় সামাজিক প্রথা অনুযায়ী সধবাদের একে অন্যকে সিঁদুর পরানো দিয়ে, আর শেষ হয় হোলি-র মতো মুখে-গালে জবরদস্তি সিঁদুর মাখিয়ে দেওয়ার দুষ্টুমি দিয়ে। বেশ মজা লাগে দেখে; কিন্তু বছরকয়েক আগে এখানকার সিঁদুরখেলায় সবচেয়ে প্রাণোচ্ছল এক বৌদি, দুর্ঘটনায় স্বামীর অকালমৃত্যুর পর হারিয়ে গেল নবমীসন্ধ্যার এই আনন্দবাসর ছেড় --- তারপর থেকেই সিঁদুরখেলার আনন্দ-উচ্ছ্বাস-উচ্ছলতার আড়ালে বেশ কিছু দীর্ঘশ্বাস শুনতে পাই যেন!ডঃ সুজন সরকারবর্ধমান।

অক্টোবর ০৫, ২০২২
রাজ্য

২৬৩ বছরের পুরানো কালনার ভবানন্দপুরে বিচারক হরিনারায়ণ মুখোপাধ্যায়'র "মুখার্জী বাড়ি"র পুজো

কালনা শহর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি গ্রাম ভবনন্দাপুর। সেই সময়ে শহর থেকে দূরে এই প্রত্যন্ত গ্রামে দুর্গা পুজো করা দূর অস্ত, ভাবনাটাই ছিলো কঠিন। বর্তমানে মুখোপাধ্যায় পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য অশোক মুখোপাধ্যায় জানালেন, সতেরশো খীষ্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে তৎকালীন কোলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কালনা মহুকুমার অন্তর্গত ভবানন্দপুর গ্রামে জমিদারী লাভ করেন। এই অঞ্চলে দুর্গা পুজোর অধিক্য সেভাবে না থাকায় তিনি দুর্গা পুজোর উদ্যোগ নেন। বহুকাল অবধি এই মুখোপাধ্যায় পরিবারের পুজো-ই গ্রামের একমাত্র পুজো ছিলো। গ্রামবাসীরা চারদিন ধরে এই মন্ডপেই আনন্দ করতেন।শারদ সন্মান নিয়ে ক্ষুদে সদস্যদের উল্লাসভবানন্দপুরে গ্রামে এই দুর্গা পুজোর প্রবর্তক ছিলেন হরিনারায়ন মুখোপাধ্যায়। তারই উদ্যোগে এই পুজোর সূত্রপাত। পরিবারের সুত্রে জানা যায়, হরিনারায়ণ মুখোপাধ্যায় ১৭৫৯ এ (ইংরাজী) এই পুজো শুরু করেন। সাবেকি ঘরানার প্রতিমা, প্রথা মেনে মহালয়ার ভোরে দেবীর চক্ষূদান করা হয়। দেবীর গায়ে মাটি দেওয়া হয় জন্মাষ্টমীর পরেরদিন। মুখোপাধ্যায় পরিবারের সদস্য অশোক মুখোপাধ্যায় জনতার কথা কে জানান, অতীতে এই পুজোতে ছাগল বলিদান দেওয়া হত। উত্তরসুরীদের কাছে শোনা কথা, কোনও এক সাধক একবার এই পুজোতে আসেন, তাঁর আদেশেই ছাগল বলি দেওয়া বন্ধ হয়। বর্তমানে এই পুজোতে ছাঁচি কুমড়ো, কলা ও আখ বলি দেওয়া হয়। নবমীর দিন কুমারী পুজোর আয়োজন করা হয়।মুখার্জী বাড়ির কুমারী পুজোঅশোক মুখোপাধ্যায় আরও জানান, গ্রামের সকলে এসে মায়ের ভোগ প্রসাদ গ্রহণ করেন। আনুমানিক ১৫০০ থেকে ১৬০০ মানুষ মায়ের ভোগ প্রসাদ এখানে বসে খেয়ে যান। গ্রামের মানুষজনই সোৎসাহে এই ভোগ প্রসাদ বিতরণ করেন। জনতার কথার প্রতিনিধীর, দ্রব্য মুল্য বৃদ্ধিতে পুজোর আচার বা মানুষজন কে নিমন্ত্রনে কোনও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে কিনা প্রশ্নের উত্তরে অশোক মুখোপাধ্যায় জানান, দ্রব্য মুল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সেভাবে আমারা কোনও কিছু ত্রুটি রাখিনি, কিভাবে মায়ের পুজোর যোগার হয়ে যাচ্ছে সেটা আমরাও বুঝতে পারিনা, পরিবারের প্রত্যকেই তাঁর অর্থনৈতিক ক্ষমতা মত এগিয়ে আসেন তাই এই পুজো করতে আমাদের সেভাবে এখনও কোনও অসুবিধার মধ্যে প্ররতে হয়নি।পরিবারের আরও এক সদস্য তাপস মুখোপাধ্যায় জানান ১৭৭৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট কোলকাতা ফোর্ট উইলিয়ামে চালু হয়। হরিনারায়ণ মুখোপাধ্যায় সেই সময়ে সেই কোর্টে কলকাতায় বিচারক ছিলেন তাঁরই উদ্যোগে এই পুজোর শুরু। তাঁর কথায় এই পুজোর খরচ মায়-ই যোগার করে নেন। তিনি আরও বলেন পরিবারের সকলে এবং গ্রামবাসীদের নিয়ে এই পাঁচদিন আমরা মাতোয়ারা থাকি। তাঁর বিশ্বাস খুবই জাগ্রত এই পুজো।পরিবারের কনিষ্ট সদস্য কুনাল মুখোপাধ্যায় জানান, বংশ পরম্পরায় একটা লিগাসি আমরা ক্যারী করে চলেছি খুব আনন্দ সহকারে, আমরা কোনও সময়েই মনে করিনা আমরা খাওয়াচ্ছি। এই যে গ্রামবাসীদের ভোগ বিতরণ, এটা মা দুর্গা নিজেই করিয়ে নেন, এতে আমাদের কোনও ভুমিকা নেই। তিনি ও পরিবারের বাকি সদস্যরা প্যানোরামা ও জনতার কথার শারদ সন্মান সেরা বনেদী বাড়ির পুজো পুরস্কার পেয়ে খুবই আনন্দিত বলে জানান। পুরস্কার পাওয়ার মোমেন্টো নিয়ে পরিবারের সদস্যদের ঢাক বাজিয়ে নৃত্য করতেও দেখা যায়।

অক্টোবর ০৪, ২০২২
রাজ্য

দেবীর নয়টি রূপের নব-কুমারী পুজো বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে

কোভিড বিধি শিথিল হতেই সেই পুরনো ছন্দে ফিরেছে উৎসব।ছন্দে ফিরেছে বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দির। প্রাচীন রীতিনীতি মেনেই নবমীর দিনে বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে কুমারী পুজোর আয়োজন করা হয়। যদিও অন্যান্য জায়গায় অষ্টমীতে কুমারী পুজো হলেও এখানে নবমী তিথিতেই নজন কুমারীকে দেবী দুর্গার নটি রূপে পুজো করা হয়ে থাকে। দেবীর নটা রূপের বিভিন্ন কুমারীরা হলেন, কালিকাঃ প্রত্যুষা ভট্টাচার্য, সাগ্নিকা মিশ্রঃ মালিনী, প্রত্যাশা চক্রবর্তীঃ সুভগা,কব্জিকাঃ রীতবৃতি ব্যানার্জী,কালসন্দর্ভাঃ মেঘা রায়,বর্ণিতা মুখার্জিঃ মালিনী,কালসন্দর্ভাঃ ঐশী মুখার্জি, পৌষালী চক্রবর্তীঃ মালিনী আর উমাঃ সুর্বণা ব্যানার্জী। নবকুমারী পুজোর জন্য অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিন মন্দিরে বেশ ভিড় দেখা যায় মন্দিরে।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,বর্ধমানের রাজপরিবারের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দির বর্ধমানের ঐতিহাসিক মন্দিরগুলির অন্যতম। বাহির সর্বমঙ্গলা অঞ্চলে বাস করা চুনুরীদের কাছ থেকে পাওয়া কষ্ঠি পাথরের অষ্টাদশী ভূজা দেবী মূর্তি বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। ১৭৪০ সালে রাজা কীর্তি চাঁদ অষ্টাদশী দেবী মূর্তিকে প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে মহতাব চাঁদ এই মন্দির তৈরী করেন। রাজা নেই তো কি হয়েছে, রাজার নিয়ম নীতি সবই এখনও বর্তমান। পুজোর দিনগুলোয় ঐতিহ্য মেনে অক্ষরে অক্ষরে মানা হয় সেই রাজ পারিবারের রীতিনীতি। নিয়ম নিষ্ঠায় কোনও নড়চড় হয় না। বর্ধমান শহর ছাড়িয়ে জেলা ও ভিন জেলার বহু ভক্ত এদিন নবকুমারী পুজোয় উপস্থিত হন।জমিদারি প্রথা বন্ধ হলে, ১৯৫৯ সালে তৎকালীন মহারাজ উদয় সিংহ একটি ট্রাস্টি বোর্ড তৈরি করেন এবং তাদের হাতেই মন্দিরের দায়িত্ব তুলে দেন তিনি। এরপর থেকে আজও এই পুজো এবং মন্দিরের দায়িত্ব নিয়ম মেনে পালন করে চলেছে এই ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা।অন্যান্য অনেক জায়গায় অষ্টমী তিথিতে কুমারী পুজো আয়োজন করা হলেও যেহেতু এখানে নবরাত্রি পুজো হয়। তাই নবমী তিথিতে সর্বমঙ্গলা মন্দিরে কুমারী পুজো হয়ে আসছে।ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, একেবারে নিয়ম মেনেই এখানে নব কুমারী পুজো হয়। কোভিডের জন্য গত বছর শুধুমাত্র একজন কুমারীকে পুজো করা হয়। কিন্তু এবার ৯ জন কুমারীকেই পুজো করা হচ্ছে। এদিন পুজো শেষে মালসায় করে ভোগ বিতরণ করা হয়।

অক্টোবর ০৪, ২০২২
নিবন্ধ

সেই ঘচাংফু দেখতে আগে কচিকাঁচাদের ভিড়ে জুটে যেতাম আমিও

ঘুম ভেঙেছে অনেকক্ষণ, তাও এপাশ ওপাশ করতে করতে শেষতক যখন বিছানা ছাড়লাম, ঘড়ির কাঁটা সাতটা ছাড়িয়েছে। আদা-চা খেয়ে সংক্ষিপ্ত স্নান... নতুন পাঞ্জাবী... মেয়েকে টেনে তুলে স্নান করানো... তারপর সোজা মণ্ডপে।বুড়োদা-নুপুরদার যুগলবন্দীতে মহাষ্টমীর সকালের পুজো তখন মাঝপথে। বুড়োদা-র বাবা স্বর্গত ব্রজরাখাল মুখোপাধ্যায় আমাদের কুলপুরোহিত ছিলেন। দীর্ঘকায় কৃশ মানুষটিকে দাদামশাই বলতাম আমরা। পরিণত বয়সেও ঈষৎ ঝুঁকে দাঁড়িয়ে একহাতে ঘণ্টা নেড়ে তাঁর আরতি করা মনে পরে আজও।বাবার পর পুজোর দায়িত্ব নিল বুড়োদা, বংশীধর মুখোপাধ্যায়-- সেও হয়ে গেল তিন দশকের ওপর। স্বল্পভাষী প্রচারবিমুখ নির্লোভ মানুষটিকে বড় ভাল লাগে আমার; কী নিষ্ঠাভরে একমনে কোনো হাঁকডাক ছাড়াই পুজো করে যান, এই মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে-মার্কা আধুনিক দুনিয়ার সামনে তা একটা দৃষ্টান্ত হতে পারে!তন্ত্রীধারক পুরোহিত, অর্থাৎ যিনি পুঁথি দেখে মন্ত্রপাঠ করেন--- সেই ভূমিকায় দূরশৈশবে দেখতাম স্বর্গত প্রভাকর ভট্টাচার্য ওরফে হদেভটচাজ -কে। আবছা আবছা মনে পড়া সেই বৃদ্ধ মানুষটি আত্মহত্যা করার পর বহুবছর দায়িত্বে ছিলেন স্বঃ অজিত ভট্টাচার্য। তাঁর অবর্তমানে নুপুরদা, সে হবে বছরকুড়ি।চাতোর-এ বসে মন্ত্রোচ্চারণ শুনছি --অং মম হৃদয়ে, তং মম বাহুমূলে, নং মম জিহবায়, সং মম নাসিকায়...ইত্যাদি। মাথার ওপর অশ্বত্থগাছের পাতায় হাওয়া বইছে ঝিরঝিরিয়ে... পুবের আকাশে ঘনাচ্ছে ধূসর-কালো মেঘ... রোদ ওঠেনি এখনো... একসার প্যাঁকপেঁকে হাঁস পচাকাকার বাড়ি থেকে বেরিয়ে হেলেদুলে চলে গেল পাশের পুকুরের দিকে...কাছে বসা বিনুদা-র সাথে টুকটাক গল্প জুড়ে দিলাম। বিনুদা প্রতিবেশী, বছর আষ্টেক বড় আমার চেয়ে। সেলস-এর কাজে ছিল বর্ধমান-এর এক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে। সুদীর্ঘ কর্মজীবন ছেড়ে ইদানীং বসে গেছে গাঁয়ে। ছেলে সম্প্রতি দুর্গাপুরে কাজ পেয়ে চলে গেছে... মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে সে-ও বছরসাতেক হোলো... গ্রামে সময় কাটে না... লোকজন নেই... কথা বলার তেমন কেউ নেই...ঘরে বসেই টুকটাক কাজ করো না কেন বিনুদা?দূর দূর! ধারবাকিতেই খেয়ে নেবে সব।ঢাক বেজে উঠলো ঝমঝমিয়ে, সঙ্গে কাঁসরঘন্টা। সকালের আরতি শুরু। আশপাশের মেয়ে-বৌরা জুটতে লাগলো পুজোতলায় । বাটি হাতে রঙিন পুঁচকে... সদ্যতরুণী মায়ের কোলে ছটফটে বাচ্চা... স্খলিত পায়ে আমার বাবা-মায়ের মতো জনাকয় বয়স্ক মানুষ...উঠে দাঁড়ালাম গিয়ে ঢাকীর ঠিক পিছনে, এখান থেকে প্রদীপের আলোয় চকচকে মায়ের মুখ ভালো দেখা যায়।আরতি শেষ হতেই সকালের পুষ্পাঞ্জলি। পুজোর ঘরে ঢুকে পড়ে রূপা-তিস্তা-আমি বসে পড়লাম দেওয়াল ঘেঁষে। ঠাসাঠাসি ভীড়। হাতে হাতে গঙ্গাজল.. ফুল.. বেলপাতা। মন্ত্র বেশীরভাগই মুখস্থ হয়ে গেছে এত বছরে, বাকিটা কান খাড়া করে শুনে যা মনে আসে বলে দিলাম। মা নিজ গুণে ক্ষমা করে দেবেন!এক ব্যাচে সব কুলোলো না, আরেক ব্যাচ ঢুকলো ঘরে। পুরোহিত ঠাকুরকে প্রণাম করে বেরিয়ে এসে সিদ্ধান্ত হোলো: রূপা ডায়াবেটিক, তাই উপবাস আর দীর্ঘায়িত করবে না; মহাভক্ত তিস্তা আর আমি মহাষ্টমীর উপবাস টেনে দেব বিকেলে সন্ধিপুজা অবধি। আর সদা-উপবাসী আমার মা তো আছেই !সন্ধিক্ষণ আজ বিকেল সাড়ে তিনটেয়। আমাদের পুজো বৈষ্ণবমতে, তাই বলি নেই। তবে পাড়ার একপ্রান্তে সিংহবাড়ির পুজোয় (ওঁরা প্রতিমা ছাড়াই, শুধু মণ্ডপে মঙ্গলঘট স্থাপন করে পুজো করেন) চালকুমড়ো বলি হয়। সেই ঘচাংফু দেখতে আগে কচিকাঁচাদের ভিড়ে জুটে যেতাম আমিও।যুগ যুগ ধরে বর্ধমান শহরের প্রসিদ্ধ সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দিরের সামনের চক-এ রাখা কামান দাগা হোতো সন্ধিক্ষণে। সেই কামান-নির্ঘোষ শুনে আশপাশের সমস্ত গ্রামগঞ্জে সন্ধিপুজোর সূচনা হোতো। গত শতাব্দীর শেষের দিকে একবার কামান দাগার সময় দুর্ঘটনা ঘটে-- কামানটি ফেটে গিয়ে দুজন প্রাণ হারান। সেই ঘটনার পর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে ধর্মীয় কারণে কামান দাগার রেওয়াজ--- বর্ধমানে তো বটেই, পরবর্তীকালে বাংলার অন্যত্রও। এখন ঘড়ির কাঁটাই নির্দেশ দেয় -- কোন মুহূর্তে কোথাও সন্ধিপুজোর আরতিতে ঢাকে কাঠি পড়বে, বা ঝলসে উঠবে বলির খড়গ অন্য কোথাও!দুপুরবেলা পুণ্যকামী চিত্তে উপোসী পাকস্থলী থেকে মনকে সরানোর প্রয়াস পাচ্ছি, এমন সময় আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামলো। সেই শুরু; অঝোরধারায় বর্ষণ চললো দুপুর গড়িয়ে বিকেল। আকাশের মুখ ঢাকা, ধোঁয়ামাখা চারিধার...দুলছে বাঁশবন, কলার ঝাড়...পাশের বাড়ির টিনের চালে অবিরাম ঝমাঝম... উঠোন জুড়ে জলের ধারা... ছাদ থেকে দৃশ্যমান দূরে হারানো সবুজ খেতের সর্বাঙ্গে বৃষ্টির ধূসর চাদর ...ডানপিটে বৃষ্টির মধ্যে শেষ পর্যন্ত ছাতা নিয়েই ঠাকুরতলায়। পুজোপাঠের পর শুরু হলো আরতি। এই দুর্যোগেও এসেছেন অনেকেই --- ঠাকুরঘরের বারান্দায়-ছাউনিতে-ছাতামাথায় গাছতলাতেও! জোড়া ঢাক- জোড়া কাঁসর -পেটাই ঘণ্টার সমবেত গুরুনাদে চাপা পড়ে গেছে বর্ষণগীত। ধুপধুনোর মৃদু ধূম্রজালের মধ্যে দিয়ে প্রদীপের আলো ঝিকমিক করছে মায়ের মুকুটে.. কানপাশায়.. ডাকের সাজে।বহুক্ষণ চললো আরতি। বৃষ্টি ধরে এলো ক্রমে; কমে আসছে দিনের আলোও। ততক্ষণে চোখ বুজে জোড়হাতে চেয়ে ফেলেছি সবার জন্য অনেক কিছু। রুপোর চামর দুলিয়ে আরতি শেষ করলো বুড়োদা। আমরাও জলকাদা-মাখা পা চাতোর-এর টিউবওয়েলে ধুয়ে এসে বসে পড়লাম পুষ্পাঞ্জলি দিতে। অঞ্জলির শেষে নতুন করে চাওয়ার মতো কিছু আর মনে এলো না। শুধু মনে মনে বললাম বারবার-- মা, আমাদের সবাইকে দেখো, ভালো রেখো , রক্ষা কোরো।ডঃ সুজন সরকার,বর্ধমান।

অক্টোবর ০৪, ২০২২
রাজ্য

নবপত্রিকা স্নানের মধ্যে দিয়ে মহা সপ্তমীর পূজা শুরু

মহাষষ্ঠী অতিক্রান্ত করে আজ সকালে নবপত্রিকা স্নানের মধ্য দিয়ে পারিবারিক প্রথা মেনে বর্ধমানে সেরা বনেদী বড়ির শিরোপা জয়ী দাস বাড়ির পুজো শুরু হল। পরিবারের সকল সদস্যরা বাড়ি থেকে নবপত্রিকা নিয়ে বর্ধমান শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বাঁকা নদীর ক্ষেত্রপাল ঘাটে যান। সেখানে পুজো পাঠ এবং শঙ্খ ও উলুধ্বনির মধ্যে দিয়ে নবপত্রিকা স্নান করান পরিবারের উত্তর পুরুষ শিব শঙ্কর দাস। এরপর দুর্গামন্দিরে এনে বিশেষ পুজোর পর নবপত্রিকাকে নতুন বস্ত্র পরিধান করিয়ে শুরু হয় মহাসপ্তমীর পুজো।

অক্টোবর ০২, ২০২২
রাজ্য

মফস্বল ও শহরতলি থেকে কলকাতায় রাত জেগে প্রতিমা দর্শনঃ রাতভোর লোকাল ট্রেনের সময়সূচি জানুন

বাংলার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো হেরিটেজ তকম দিয়েছে। তা নিয়ে মাতোয়াড়া বাংলা। এদিকে কলকাতার প্রতিমা দর্শনে সাধারণের সুবিধা করতে প্রতিবারের মতো এবারও এগিয়ে এসেছে পূর্ব রেল। দুর্গা-পুজোয় ঠাকুর ও প্যান্ডেল দেখার জন্য একগুচ্ছ অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত পূর্ব রেলের। পুজোতে রাতভর ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত কথা জানালো রেল। পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনে ২০টি স্পেশাল ট্রেন দুর্গাপুজোর পঞ্চমী থেকে দশমী অবধি চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে। এই বাড়তি ট্রেন গুলি শিয়ালদহনৈহাটি, শিয়ালদহরানাঘাট, শিয়ালদহবনগাঁ, শিয়ালদহ-ডানকুনি ও দক্ষিণ শাখায় স্পেশাল বজবজ এবং বারুইপুর লোকাল চালানো হবে বলে সুত্রে জানা গেছে।কোন ষ্টেশন থেকে কোন সময় স্পেশাল ট্রেনগুলি ছাড়বে জেনে নিনঃ* শিয়ালদহ থেকে রানাঘাট যাবার শেষ ট্রেন শিয়ালদহ ষ্টেশন ছাড়বে রাত ১২ টা ৪০ মিনিটে। রানাঘাট থেকে শিয়ালদহ আসার লোকাল ট্রেন রানাঘাট ছাড়বে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে।* দুটি স্পেশাল শিয়ালদহ-নৈহাটি লোকাল চালানো হবে রাতে। রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে একটি ট্রেন শিয়ালদহ থেকে ছাড়বে, অপরটি ২টা ৩০ মিনিটে। ওই একই শাখায় নৈহাটি থেকে শিয়ালদহের উদ্দেশে শেষ দুটি ট্রেন ছাড়বে যথাক্রমে রাত ১২টা ২৫মিনিট ও রাত ২টা ৫৫ মিনিটে।* শিয়ালদহ - বনগাঁর লাইনের শেষ ট্রেন শিয়ালদহ ষ্টেশন ছাড়বে রাত ১২টা ৪০ মিনিটে। অন্যদিকে বনগাঁ থেকে শেষ শিয়ালদহ আসার শেষ লোকাল ছাড়বে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে।* শিয়ালদহ-ডানকুনি শেষ লোকাল ট্রেন শিয়ালদহ ছাড়বে রাত ১১টা ৩০ মিনিটে। আবার ডানকুনি থেকে শিয়ালদহের উদ্দেশে শেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ১২টা ২৫ মিনিটে।* এছাড়া অতিরিক্ত ভিড় ও ঠাকুর দেখার জন্য পুজোর সময় এক জোড়া রানাঘাট-বনগাঁ লোকাল ট্রেন চলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল দপ্তর। রানাঘাট থেকে বনগাঁ যাওয়ার শেষ লোকাল ট্রেনটি ছাড়বে রাত ১০টায়। অপরদিকে, রানাঘাট আসার শেষ ট্রেন বনগাঁ ষ্টেশন ছাড়বে ৯ টা ৫৮ মিনিটে।* শিয়ালদহ-বারুইপুর শাখায় তিন জোড়া লোকাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব রেল। শিয়ালদহ থেকে সেই তিনটি ট্রেন ছাড়বে যথাক্রমে- দুপুর ৩টা ২০ মিনিট, রাত ১২টা ৩০ এবং ২টা ২০ মিনিটে।* বারুইপুর থেকে শিয়ালদহ আসারও ট্রেন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ওই শাখায় তিনটি লোকাল ট্রেন দেওয়া হয়েছে। একটি বিকেল ৪টা ৩৮ মিনিটে, বাকি দুটি রাত ১টা ২৫ মিনিটে ও ভোর ৩টা ১০ মিনিটে।* শিয়ালদহ-বজবজ শাখায়, বজবজ স্টেশন থেকে শিয়ালদহ আসার শেষ লোকাল ট্রেন ছাড়বে রাত ১২টা ৩০ মিনিটে। অপরদিকে শিয়ালদহ থেকে বজবজের উদ্দশ্যে শেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ১১টা ৩০ মিনিটে।

সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২
রাজ্য

বর্ধমানের ৪০০ বছরের পুরানো এই জমিদার বাড়ি পুজো এখন এলাকার পুজো

এলাকায় এখনো রাশভারী জমিদার বাড়ি হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু বর্তমানে এই খাঁ পরিবার আর্থিক অনটনে জর্জরিত। তবে তাই বলে কি দুর্গাপুজো বন্ধ হয়ে যাবে। মুসকিল আসানে এগিয়ে এসেছেন পাড়া প্রতিবেশীরা। এখন পাড়াপ্রতিবেশীরাই চাঁদা তুলে জমিদার খাঁ বাড়ির দুর্গা পুজোর আয়োজন করেন।প্রায় ৪০০ বছরের পুরানো এই পুজো। পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের মোহনপুর গ্রামে খাঁ পরিবারের আগে জমিদারি ছিল। বনপাশ পঞ্চায়েত এলাকার মোহনপুর বহু পুরানো একটি গ্রাম। এই গ্রামের খাঁ পরিবারের দুর্গাপুজো এলাকার সবচেয়ে পুরনো পুজো। এখন জমিদারী না থাকলেও খাঁ পরিবারের সেই সাবেকি আমলের ভাঙাচোরা দুর্গামন্দির দাঁড়িয়ে আছে। মন্দিরের যদিও ভগ্নপ্রায়।স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশীষ সাধু জানান বিগত কয়েকবছর ধরেই পাড়ার লোকজনরাই নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে এই পুজোর আয়োজন করে আসছেন। খাঁ পরিবারের সদস্যা লতিকা খাঁ জানান একসময় পরিবারে স্বচ্ছলতা ছিল তখন ধূমধাম করে পুজো আয়োজন করা হত। কয়েকশো মানুষ টানা কয়েকদিন ধরে পুজোয় মেতে থাকতেন। তাদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও হত। কিন্তু এখন আর্থিক অবস্থা খারাপ। তাই পাড়ার সকলে মিলে পুজোর দায়িত্ব নিয়েছেন।

সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২
  • ‹
  • 1
  • 2
  • 3
  • ›

ট্রেন্ডিং

দেশ

পাকিস্থানে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ধবংস, জম্মু সহ দেশের বহু শহরে ব্ল্যাক আউট, ৩টে পাক যুদ্ধবিমান ভূপাতিত

অপারেশন সিন্দুরের পর লাহোরে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ধ্বংস করে পাকিস্তানকে উপযুক্ত জবাব দিয়েছে ভারত। পহেলগাঁওয়ে বর্বরোচিত জঙ্গি হামলার জবাবে ভারত অপারেশন সিন্দুর-এর মাধ্যমে তার যোগ্য জবাব দিয়েছে। ভারত গতকাল পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নির্ভুল হামলা চালানো হয়। সন্ধ্যের পর থেকে জম্মু-কাশ্মীর ও গুজরাটের বহু শহর ব্ল্যাক আউট করা হয়েছে। জম্মুতে ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে পাকিস্তান। দুটি যুদ্ধ বিমান গুলি করে ধ্বংস করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ৭ ও ৮ মে মধ্য রাতে পাকিস্তান ভারতের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করে। অবন্তীপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, জলন্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, চণ্ডীগড়, ভুজ সহ ১৫টি শহরে এই হামলার চেষ্টা করা হয়। তবে, ভারতের কাউন্টার ইউএএস (Unmanned Aerial System) ও এয়ার ডিফেন্স ব্যবস্থা সফলভাবে এই আক্রমণগুলিকে প্রতিহত করে। এদিকে ভারতের পাল্টা পদক্ষেপে লাহোরে পাকিস্তানের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে লাহোরে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এই তথ্য নিশ্চিত করে। অন্যান্য সীমান্তবর্তী এলাকাতেও বিস্ফোরণের খবর আসে। লাহোরে এয়ার ডিসেন্স সিস্টেম গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কুপওয়ারা, বারামুল্লা, উরি, পুঞ্চ, মেন্ধার ও রাজৌরি সেক্টরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মর্টার শেল নিক্ষেপে মৃত্যু হয়েছে ১৬ জন নিরীহ নাগরিকের। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৩ জন মহিলা ও ৫ জন শিশু। পাশাপাশি সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পাকিস্তান ৭ মে রাতে অবন্তীপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, কাপুরথালা, জলন্ধর, লুধিয়ানা, বাথিন্ডা, চণ্ডীগড়, এবং ভুজ-এর মতো উত্তর ও পশ্চিম ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থান লক্ষ্য করে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করে। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী সেই হামলাগুলি সফলভাবে প্রতিহত করে।

মে ০৮, ২০২৫
রাজ্য

উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম বর্ধমানের রুপায়ন পাল, জয়জয়কার পূর্ব বর্ধমানের

ভারতীয় সেনাারা অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে গুড়িয়ে দিয়েছে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি। মঙ্গলবার ভোররাতের ওই ঘটনায় বেজায় খশি এবছর উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে প্রথম স্থান পাওয়া বর্ধমান সিএমএস হাই স্কুলের ছাত্র রুপায়ন পাল। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৭ (৯৯.৪ শতাংশ)। বুধবার ফল প্রকাশের পর কৃতী ছাত্র রুপায়ন সাংবাদিকদের বলে, ভারতীয় সেনারা যে প্রত্যাঘাত করেছে সেটা যথেষ্টই প্রশংসনীয়। প্রত্যেক ভারতীয় জন্য এটা গর্বের। উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার আরও ছয় কৃতী ছাত্র ছাত্রী।রুপায়ন পালেদের আদি বাড়ি ভাতারের খেড়ুর গ্রামে। তবে এখন তাঁরা থাকেন বর্ধমান শহরের সুভাষপল্লী কালীতলায়। রূপায়ণের বাবা রবীন্দ্রনাথ পাল জামালপুর থানার জৌগ্রাম হাই স্কুলের শিক্ষক। মা জয়শ্রী পাল ভাতারের ভাটাকুল স্বর্ণময়ী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা।রুপায়ন জানিয়েছে, মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় আমি পঞ্চম স্থানে ছিলাম।উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা ভাল হলেও মেধা তালিকার একেবারে প্রথম স্থানে আমি থাকব, এতটা আমি আশা করিনি।রুপায়ন জানিয়েছে, তাঁর এই সাফল্যের পিছনে সবথেকে বড় অবদান রয়েছে তাঁর বাবা ও মায়ের।পাঠ্য পুস্তক পড়ার পাশাপাশি গল্পের বই পড়ার প্রতিও যথেষ্ট ঝোকঁ রয়েছে রুপায়নের। তাঁর প্রিয় লেখক শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রিয় চরিত্র ব্যোমকেশ। উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল ফল করার জন্য দৈনিক ১২-১৩ ঘন্টা পড়াশুনা করেছে রুপায়ন। কৃতী এই ছাত্র ডাক্তার হতে চায়। তার জন্য সে জয়েন্ট পরীক্ষাও দিয়েছে বলে জানিয়েছে। ডাক্তার হতে চাওয়ার কারণ ব্যাখ্যাও করেছে রুপায়ন।তবে শুধু রুপায়ন পালই নয়, মাধ্যমিকের মতই উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকাতে পূর্ব বর্ধমান জেলার একাধীক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা জায়গা করে নিয়েছে। মেধা তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছে জেলার কাটোয়া কাশীরাম দাস ইনস্টিটিউশনের ছাত্র ঋদ্ধিত পাল এবং ভাতার এম পি হাইস্কুলের ছাত্র কুন্তল চৌধুরী। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৩ (৯৮.৬ শতাংশ)। এছাড়াও ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে কাটোয়া ডি ডি সি গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী দেবদত্তা মাঝি ও মেমারির ভি এম ইনস্টিটিউশন (শাখা ১) এর ছাত্র জয়দীপ পাল। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর-৪৯২ (৯৮.৪ শতাংশ)। ২০২৩ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় দেবদত্তা ৭০০ নম্বরে মাধ্যম ৬৯৭ নম্বর পেয়ে রাজ্যে প্রথম হয়েছিল।ইতিমধ্যেই এবছর জয়েন্ট এন্ট্রান্সের (JEE মেন) প্রথম সেশনের পর দ্বিতীয় সেশনেও ১০০-য় ১০০ পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে কাটোয়ার দেবদত্তা মাঝি। এবছরের উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকার সপ্তম স্থানে এবং দশম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলে দুই কৃতী ছাত্র শুভম পাল ও অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়। সপ্তম স্থানাধিকারী শুভমের প্রাপ্ত নম্বর - ৪৯১ (৯৮.২ শতাংশ)। আর দশম স্থান থাকা অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৮ (৯৭.৬ শতাংশ)।

মে ০৭, ২০২৫
দেশ

জৈশ এ মহম্মদের মাথা মাসুদ আজহারের ডেরায় আক্রমণ, তাঁর পরিবারের ১৪ জন নিহত

অপারেশন সিন্দুরের সবচেয়ে বড় লক্ষ্যবস্তু ছিল বাহাওয়ালপুরে অবস্থিত জইশ-ই-মোহাম্মদের সদর দপ্তর, যার নেতৃত্বে ছিলেন কুখ্যাত সন্ত্রাসী মাসুদ আজহার। আজহারকে শেষবার বাহাওয়ালপুরে সংগঠনটির মাদ্রাসার কাছে দেখা গিয়েছিল, যেখানে ওই মাদ্রাসাটি একটি নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করত, পাশাপাশি সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য তহবিল সংগ্রহের উৎসও ছিল। ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রগুলি হাফিজ সাইদের লস্কর-ই-তৈয়বার সাথে সম্পর্কিত মুরিদকেতে সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সহ এই মাদ্রাসাটি ধ্বংস করে দিয়েছে। সূত্রের খবর, মাসুদ আজহারের পরিবারের ১৪জন সদস্য নিহত হয়েছেন। তাঁর ভাই এি হামলায় মারা গেছেন বলে খবর। প্রাথমিক অনুমান অনুসারে প্রায় ৭০ জন জঙ্গিকে নির্মূল করা হয়েছে এবং ভারতীয় ভূখণ্ডে আক্রমণ চালানোর জন্য ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। ভারতীয় বাহিনীও পাকিস্তানের বিমান হামলার প্রতিশোধমূলক লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে, পাকিস্তানি F-16 এবং JF-17 যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে, যার মধ্যে একটি JF-17 ,আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ব্যবহার করে ভূপাতিত করা হয়েছে।প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়ন অনুসারে, এই হামলার আকার এবং নির্ভুলতা ভারতের নিরাপত্তা নীতিতে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে। এটি প্রথমবারের মতো অভিযানগুলিকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সীমাবদ্ধ রাখার পরিবর্তে ভারত পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের গভীরে, পাঞ্জাব প্রদেশে, আক্রমণ করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন যে এই পদক্ষেপটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ভারত সীমান্তবর্তী সন্ত্রাসবাদকে মেনে নেবে না এবং তার নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

মে ০৭, ২০২৫
দেশ

পহেলগাঁওয়ের বদলা নিল ভারত, পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা

অবশেষে চরম বদলা নিল ভারত। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পাল্টা পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে গুড়িয়ে দিল ভারতীয় সেনা। একেবারে বেছে বেছে নির্দষ্ট ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে বিধ্বংসী হামলা চালানো হয়েছে। ভারত এই অপারেশনের নাম দিয়েছে অপারেশন সিন্দুর। এই বদলার খবর ভারতীয় সেনার তরফেই প্রকাশ করা হয়েছে।ভারত পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে তার মধ্যে ৪টি পাকিস্তানের পাঞ্জাবের বাহাওয়ালপুর এবং মুরিদকে এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে মুজাফফরাবাদ এবং কোটলিতে। এই সমস্ত এলাকাই সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি। এদিকে জম্মু বিভাগের কমিশনারের জারি করা নির্দেশ অনুযায়ী, আজ, ৭ মে (বুধবার) জম্মু, সাম্বা, কাঠুয়া, রাজৌরি এবং পুঞ্চ জেলায় সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। বিশেষ করে পুঞ্চ জেলায় নিরাপত্তা সতর্কতা জারি হওয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পুঞ্চ জেলার সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয় আজ, ৭ মে ২০২৫, বন্ধ থাকবে।আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য গর্বিত।OperationSindoor হল পহেলগামে আমাদের নিরীহ ভাইদের নৃশংস হত্যার প্রতি ভারতের প্রতিক্রিয়া। ভারত এবং তার জনগণের উপর যে কোনও আক্রমণের উপযুক্ত জবাব দিতে মোদী সরকার বদ্ধপরিকর। ভারত সন্ত্রাসবাদকে তার মূল থেকে নির্মূল করতে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।এদিকে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটিতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পাকিস্তানি বাহিনীর আন্তঃসীমান্ত গোলাবর্ষণে জম্মু ও কাশ্মীরে কমপক্ষে সাতজন নাগরিক নিহত এবং ৩৮ জন আহত হয়েছেন। পাক গোলাবর্ষণে মেন্ধরে একজন এবং পুঞ্চে ৬ জন নিহত হয়েছেন। ২০২৫ সালের ৬-৭ মে রাতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বিপরীতে আন্তর্জাতিক সীমান্তের পোস্ট থেকে কামান থেকে গোলাবর্ষণ সহ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ শুরু করে। এই তথ্য জানিয়েছেন উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডের জনসংযোগ কর্মকর্তা (প্রতিরক্ষা) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সুনীল বারাতওয়াল।

মে ০৭, ২০২৫

Ads

You May Like

Gallery

265-year-old "Mukhopadhyay House" in Bhavanandpur, Kalnar, played vermilion on Dasami during Durga Puja
BJP candidate Locket Chatterjee campaigned on the banks of the Ganges from Chandannagar Ranighat to Triveni Ghat wishing New Year.
A living depiction of history with a touch of color, everyone is enthralled by the initiative of the Eastern Railway
Sucharita Biswas actress and model on Durga Puja
Lord Kalabau came up in palanquin; Navapatrika walked towards the mandap - the puja started
On Sunday, the 'Hilsa festival' is celebrated in the city with great joy.
Check out who has joined Mamata's new cabinet
Take a look at the list of recipients at the Bangabibhushan award ceremony
If you are grassroots, you will get ration for free. Lakshmi Bhandar, Kanyashree, Swastha Sathi, Krishakbandhu, Oikyashree, Sabujsathi — you will get all.

Categories

  • কলকাতা
  • রাজ্য
  • দেশ
  • বিদেশ
  • রাজনীতি
  • খেলার দুনিয়া
  • বিনোদুনিয়া
  • সম্পাদকীয়
  • নিবন্ধ
  • ভ্রমণ
  • রাশিফল
  • টুকিটাকি
  • চিত্রহার
  • বিবিধ
  • ভিডিও

Company

  • About Us
  • Advertise
  • Privacy
  • Terms of Use
  • Contact Us
Copyright © 2025 Janatar Katha News Portal